Home বিনোদন ঘুড়ি রাজা ও বকুল রানী

ঘুড়ি রাজা ও বকুল রানী

(একটি বাংলার লোককথা)

অনেক বছর আগের কথা। এক রাজ্যে বাস করতেন এক অদ্ভুত রাজার, যাকে সবাই “ঘুড়ি রাজা” বলে ডাকত। কারণ তিনি ছিলেন ঘুড়ি উড়ানোর এক অসম্ভব পাগল ভক্ত। রাজ্যশাসন সামলানোর চেয়ে আকাশে রঙিন ঘুড়ি ওড়ানোতেই তার বেশি আগ্রহ ছিল। তার রাজ্যেও কেউ ঘুড়ি ওড়াতে পারত না, যদি না রাজা নিজে অনুমতি দিতেন।

একদিন রাজ্যে আসেন এক রহস্যময়ী নারী তার নাম বকুল। সে ঘুড়ি ওড়াতে জানত না, কিন্তু হাওয়ায় উড়তে জানত! সে বাতাসের ভাষা বুঝত, পাখিদের ডাক শুনে হাসত। সে রাজপ্রাসাদের অদূরে এক বকুল গাছের নিচে আশ্রয় নেয়।

এক সকালে রাজা হঠাৎ দেখেন, রাজপ্রাসাদের আকাশে একটি রুপালি ঘুড়ি উড়ছে যেটি তিনি নিজে ওড়াননি। রেগে গিয়ে সৈন্য পাঠালেন ঘুড়ি ধরতে। কিন্তু ঘুড়ির ডোর ধরে টান দিলে দেখা গেল সেটি কোনো কাগজ নয়, বরং এক জাদুকরী বকুলফুলে তৈরি পাখার মতো বস্তু, যার নিচে বসে আছে সেই বকুল নারী।

রাজা বিস্মিত হয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে যান। বকুল রানী বলেন, “তোমার ঘুড়ির রাজ্যে শুধু আকাশে তাকানো হয়, অথচ কেউ বোঝে না বাতাস কোথা থেকে আসে, কোন পথে যায়। আমি জানি।”

রাজা ধীরে ধীরে বকুল রানীর প্রতি মুগ্ধ হন। দুজনের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে বাতাস ও আকাশ নিয়ে। রাজা প্রথমবার তার ঘুড়ি থেকে চোখ সরিয়ে দেখলেন মাটির সৌন্দর্য মানুষের দুঃখ-কষ্ট, কৃষকের মুখ, শিশুর হাসি।

শেষ পর্যন্ত ঘুড়ি রাজা বকুল রানীকে বিয়ে করেন, এবং রাজ্য পরিচালনায় মন দেন। আর তারা মিলে প্রতিষ্ঠা করেন এক অদ্ভুত বিদ্যালয় যেখানে আকাশ দেখা শেখানো হয়, কিন্তু মাটির সঙ্গে হৃদয়ের বন্ধন বজায় রেখে।

📢 পছন্দ হলে শেয়ার করুন ও ❤️ দিয়ে উৎসাহ দিন!

📌 বাংলার লোককথা তুলে আনতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।
🔁 বন্ধুদের ট্যাগ করুন এই রূপকথা পড়তে!