Home First Lead বন্দরে কঠোর নিরাপত্তা: দেশের অর্থনীতির প্রবেশদ্বারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি

বন্দরে কঠোর নিরাপত্তা: দেশের অর্থনীতির প্রবেশদ্বারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: সম্প্রতি ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার জেরে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে দেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশনা আসার পর চট্টগ্রাম বন্দরে শুরু হয়েছে কড়াকড়ি নিরাপত্তা তৎপরতা। দেশের আমদানি-রপ্তানির ৯০ শতাংশ কার্যক্রম পরিচালিত হওয়া এই কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

 বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ন্যাশনাল অথরিটি ফর কেমিক্যাল উইপন কনভেনশন (বিএনএসিডব্লিউসি)-এর সমন্বয়ে গঠিত ১৮ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের বিশেষ নিরাপত্তা টিম চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত এই প্রতিনিধিদল বন্দর এলাকা পরিদর্শন শেষে বন্দর কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়।

প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুফে সিদ্দিকীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বিভাগীয় প্রধান ও কাস্টমস কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বন্দরের স্পর্শকাতর স্থানে নজরদারি জোরদার, সন্দেহভাজন চলাচলকারীদের তল্লাশি বৃদ্ধি, প্রবেশগেটের নিরাপত্তা স্ক্যানিং আরও কঠোর করা এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়। নিরাপত্তা টিম থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যে, যেকোনো ধরনের নাশকতা, অগ্নিসংযোগ বা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করতে হবে। এ লক্ষ্যে বন্দর এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্টের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) এনামুল করিম এই প্রসঙ্গে বলেন, “বন্দরের নিরাপত্তায় জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে সব সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে।”

বর্তমানে বন্দরের নিয়মিত নিরাপত্তা কার্যক্রমে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, আনসার ও বন্দর নিরাপত্তা কর্মীরা নিয়োজিত আছেন। বিশেষ করে বন্দরের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত হওয়ায় বন্দরের অভ্যন্তরে নৌবাহিনীর উপস্থিতি ও টহল কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর সংলগ্ন এলাকায় নৌবাহিনীর স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা বলয়কে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টম হাউজ দুটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের আমদানি-রপ্তানির বিশাল অংশ পরিচালনা করে। এ কারণে বন্দরের নিরাপত্তা কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের একক বিষয় নয়, বরং এটি গোটা দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি ও নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। তাই এই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে অপরিহার্য বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সকলেই।