Home অন্যান্য জনগণের ভাষা: সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখল নয়, স্বস্তির পথে রাজনীতি হোক

জনগণের ভাষা: সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখল নয়, স্বস্তির পথে রাজনীতি হোক

মন্তব্য প্রতিবেদন

আমিরুল মোমেনিন: রাজধানীর মিটফোর্ডে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বাড়লেও সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া একেবারে ভিন্ন। তারা চায় না আর কোনো অপরাধ রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠুক। চায় না চাঁদাবাজি, দখল, কিংবা সন্ত্রাসের মতো অপকর্মকে রাজনৈতিক পরিচয়ে আড়াল দেওয়া হোক। দেশের মানুষ এখন শান্তি চায়, নিরাপদে চলাফেরা করতে চায়, এবং ব্যবসা-বাণিজ্য নির্বিঘ্নে চালাতে চায়।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগের ভিড়ে সাধারণ মানুষের কণ্ঠ যেন চাপা পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো—এই জনগণই ভোট দেয়, এই জনগণই রাজনীতির মূল ভিত্তি। তাই তাদের প্রত্যাশা উপেক্ষা করা মানে গণতন্ত্রের মৌলিক চেতনার সঙ্গে প্রতারণা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনের কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলের অভিযোগ উঠেছে। যদিও সংশ্লিষ্ট দলগুলো বলছে, তারা এসব কর্মকাণ্ডের দায় নেবে না এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—এই অপরাধীরা এতদিন কীভাবে সক্রিয় ছিল? কেন তাদের বিরুদ্ধে আগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অপরাধের সংস্কৃতি দীর্ঘদিন ধরে গড়ে উঠেছে। ক্ষমতার দ্বারপ্রান্তে এসে অনেকেই নিজেদের প্রভাব বিস্তারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, যা শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তোলে।
এখন সময় এসেছে রাজনৈতিক দলগুলোর আত্মসমালোচনার। দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা ছাড়া জনগণের আস্থা ফেরানো সম্ভব নয়। দলীয় পরিচয় নয়, অপরাধের ভিত্তিতে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
দেশের মানুষ চায়—রাজনীতি হোক জনসেবার মাধ্যম,  অপরাধের আশ্রয় নয়। তারা চায়—রাস্তায় নিরাপদে হাঁটতে, ব্যবসা করতে, সন্তানদের স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটিতে পাঠাতে। এই মৌলিক চাহিদা পূরণে রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব এড়ানোর সুযোগ নেই।
এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো একটি সম্মিলিত রাজনৈতিক অঙ্গীকার, যেখানে সব দল ঘোষণা করবে: “আমরা অপরাধের আশ্রয় দেব না, জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তাই আমাদের অগ্রাধিকার।