বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চক দৌলতপুর এলাকায় চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় এক ব্যবসায়ীর ওপর হামলা, তার বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ব্যবসায়ী সানজিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে চক দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ব্যবসায়ী সানজিদের পথরোধ করে একদল দুর্বৃত্ত। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন একই এলাকার বাসিন্দা জব্বার, যিনি বিএনপির স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। সানজিদের অভিযোগ, জব্বার ও তার অনুসারীরা গত কয়েক মাস ধরে তার কাছে নিয়মিত চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না দেওয়ায় তার ওপর হামলা চালানো হয়।
সানজিদের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রথমে তাকে রাস্তার মোড়ে মারধর করা হয়। এরপর তার ব্যবসায়িক পার্টনার ও এক আত্মীয় এগিয়ে এলে তাদেরও বেধড়ক মারধর করে হামলাকারীরা। তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে হামলাকারীরা দলবেঁধে তার বাড়িতে হানা দেয়। সেখান থেকে নগদ অর্থ, গহনা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করার পাশাপাশি তার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আগুনে পুড়ে যায় তার এক্স নোহা মডেলের একটি মাইক্রোবাস, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪২ লাখ টাকা বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ব্যবসায়ী সানজিদ বলেন, “আমি ব্যবসা ও চাষাবাদ করে সংসার চালাই। জব্বার নামক ব্যক্তি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলেছে। আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এখন আমার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছি।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “ঘটনাটি মূলত দুই পক্ষের মধ্যে টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়েছে। একটি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে এবং মাইক্রোবাসসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছি এবং তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।”
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিলের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। এলাকার সাধারণ মানুষ এমন ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।