Home চা শিল্প চায়ের কাপে দীর্ঘায়ুর রহস্য: চা পানকারীরা কেন বেশিদিন বাঁচেন?

চায়ের কাপে দীর্ঘায়ুর রহস্য: চা পানকারীরা কেন বেশিদিন বাঁচেন?

হেলথ ডেস্ক: এক কাপ গরম চা শুধু ক্লান্তিই দূর করে না, এটি হতে পারে আপনার দীর্ঘ ও সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি। সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত চা পানের অভ্যাস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বার্ধক্যকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু সাধারণ একটি পানীয় কীভাবে আয়ু বাড়াতে পারে? চলুন জেনে নিই এর পেছনের বিজ্ঞান।

চায়ের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো এতে থাকা পলিফেনল এবং ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো শরীরের ভেতরে কোষের ক্ষয়ক্ষতি রোধ করে এবং প্রদাহ (inflammation) কমায়। বিশেষ করে গ্রিন টি-তে থাকা EGCG নামক উপাদানটি ক্যানসার প্রতিরোধে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে অত্যন্ত কার্যকর।

গবেষণা বলছে, যারা দিনে অন্তত ২-৩ কাপ চা পান করেন, তাদের হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি যারা চা পান করেন না তাদের তুলনায় প্রায় ৯ থেকে ১৩ শতাংশ কম। চা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ধমনীতে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল জমতে বাধা দেয়।

চায়ে রয়েছে ক্যাফেইন এবং এল-থিয়ানিন (L-theanine) নামক একটি অ্যামিনো অ্যাসিড। এই সংমিশ্রণটি মস্তিষ্কের মনোযোগ বাড়াতে এবং স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করতে সাহায্য করে। এটি কফির মতো হঠাৎ উত্তেজনা তৈরি না করে দীর্ঘক্ষণ মস্তিষ্ককে সচল ও শান্ত রাখতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, চা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে, যা হৃদপিণ্ড এবং পেশির কার্যকারিতা বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। এছাড়া এটি শরীরের মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রাখে, যা প্রকারান্তরে ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘমেয়াদী রোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

সতর্কতা: কীভাবে চা পান করবেন?

উপকারিতা পুরোপুরি পেতে বিশেষজ্ঞরা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-

চিনি ও দুধ এড়িয়ে চলুন: লিকার চা বা গ্রিন টি সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যকর। অতিরিক্ত চিনি বা দুধ চায়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।

খালি পেটে নয়: খুব সকালে খালি পেটে কড়া চা পানের বদলে হালকা নাস্তা করার পর চা পান করা ভালো।

অতিরিক্ত গরম নয়: ফুটন্ত গরম চা পান না করে সামান্য ঠান্ডা করে পান করা উচিত।