Home আন্তর্জাতিক চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনার সূচনা: বিশ্ব অর্থনীতিতে কি আশার আলো?

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনার সূচনা: বিশ্ব অর্থনীতিতে কি আশার আলো?

সংবাদ বিশ্লেষণ

দীর্ঘ উত্তেজনার পর অবশেষে মুখোমুখি বসলো বিশ্বের দুই প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী হে লিফেং ও মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠককে আন্তর্জাতিক মহল একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনা হিসেবে দেখছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ আলোচনা বর্তমান বৈশ্বিক মন্দার ছায়ায় কিছুটা স্বস্তি বয়ে আনতে পারে।

গত কয়েক বছরে একে অপরের পণ্যের ওপর লাগামহীন শুল্ক আরোপ করে দুটি দেশ নিজেদের মধ্যে একপ্রকার ‘অঘোষিত বাণিজ্য যুদ্ধ’ চালিয়ে এসেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র যেখানে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে, সেখানে চীনও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পিছপা হয়নি। এতে শুধু চীন-যুক্তরাষ্ট্র নয়, সরবরাহ শৃঙ্খলের ওপর নির্ভরশীল বহু দেশ ক্ষতির মুখে পড়েছে।

জেনেভার একটি  ভিলায় প্রায় দুই ঘণ্টার এই আলোচনায় উভয়পক্ষ আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না দিলেও পর্যবেক্ষকরা নেতাদের চেহারায় আশাবাদ লক্ষ করেছেন। আলোচনার পর প্রতিনিধি দলদের সুইস জাতিসংঘ দূতের বাসভবনে মধ্যাহ্নভোজেও অংশ নিতে দেখা যায়, যা সম্পর্কোন্নয়নের ইঙ্গিত দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দাবি হলো, চীন যেন আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে অভ্যন্তরীণ ভোক্তা খরচ বাড়ায় এবং মার্কিন বাজারে প্রবেশাধিকার সহজ করে। চীন সেই দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে জোরজবরদস্তি বরদাস্তযোগ্য নয় এবং তারা অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্বে কোনো আপস করবে না।

সিনহুয়া বার্তা সংস্থাও চীনের অবস্থানকে “পাথরের মতো দৃঢ়” বলে উল্লেখ করেছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, আলোচনার পরিবেশ তৈরি হওয়াটাই বড় কথা। সুইস অর্থমন্ত্রী গাই পারমেলিন বলেছেন, একটি যৌথ রোডম্যাপ তৈরির মাধ্যমে ভবিষ্যতের উত্তেজনা কমানো সম্ভব।

তবে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য কিছুটা আশাবাদের আভাস দিচ্ছে। তিনি বলেছেন, ৮০ শতাংশ শুল্কই “উপযুক্ত”, যা পূর্বঘোষিত ১৪৫ শতাংশের তুলনায় নমনীয়তা প্রকাশ করে। চীনের তরফে যদিও বলা হয়েছে, আলোচনার অনুরোধ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন আলোচনার অংশ হিসেবে ৯০ দিনের শুল্ক মওকুফের দাবি করতে পারে, যাতে চলমান অর্থনৈতিক চাপে কিছুটা স্বস্তি আসে। আলোচনার ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে তা বৈশ্বিক বাজারেও স্থিতিশীলতা আনতে পারে।