কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ছায়ায় ঝুঁকির মুখে পেশা
আইটি ডেস্ক: একসময় কল সেন্টারের ফোন বেজে উঠলেই ওপাশে ভেসে আসত এক মানবকণ্ঠ, যার দায়িত্ব ছিল ক্রেতার সমস্যা শোনা, সমাধান দেওয়া এবং সন্তুষ্ট রাখা। এখন সে জায়গা দখল করে নিচ্ছে এক ঠান্ডা অথচ দ্রুতগতির কণ্ঠ, এআই চ্যাটবট।
একটি ক্লিকেই শুরু হচ্ছে কথোপকথন। কেউ প্রশ্ন করছে “আমার অর্ডার কোথায়?”, আর সাথে সাথে চ্যাটবট জানিয়ে দিচ্ছে ট্র্যাকিং নম্বর, ডেলিভারির তারিখ এমনকি সমস্যার সমাধান। ২৪ ঘণ্টা ৭ দিন একটানা সেবা দিতে পারে এই চ্যাটবট, যেখানে মানবকর্মীর প্রয়োজন পড়ে পালাক্রমে শিফট আর বিশ্রামের।
বাংলাদেশে দিন দিন চ্যাটবট ব্যবহারের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। অনলাইন বিপণন প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে মোবাইল অপারেটর, এমনকি ব্যাংকিং সেক্টরেও এখন কাস্টমার কেয়ারের প্রথম সারিতে থাকে এআই চ্যাটবট।
টেলিকম বিশেষজ্ঞ রেজওয়ান মাহমুদ বলেন, “আগে প্রতিটি কাস্টমার কেয়ার ডেস্কে ৮-১০ জন করে কর্মী থাকত। এখন সেটি ৩-৪ জনে নেমে এসেছে। বাকিটা সামলাচ্ছে এআই।”
একটি জনপ্রিয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে চাকরি হারানো সাবেক প্রতিনিধি নাসরিন জাহান বলেন, “আমরা গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলতাম, সমস্যার ধরন বুঝে রকমভেদ করতাম। এখন দেখছি, একই সমস্যার হাজারো সমাধান একসাথে দিতে পারছে বট। আমাদের জায়গা কোথায় থাকবে?”
প্রস্তুতির পরামর্শ:
✅ নতুন দক্ষতা অর্জন করুন:
- চ্যাটবট পরিচালনা ও অপটিমাইজেশন
- সফট স্কিল উন্নয়ন (সহানুভূতি, ভাষা প্রয়োগ)
- কাস্টমার রিলেশনশিপ অ্যানালিটিক্স
✅ পেশা স্থানান্তর ভাবুন:
- কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স অ্যানালিস্ট
- বট ট্রেইনার / কনটেন্ট স্ক্রিপ্টার
- কমপ্লেক্স কাস্টমার হ্যান্ডলার (উচ্চস্তরের সমাধানদাতা)
✅ অনলাইন প্রশিক্ষণ প্ল্যাটফর্ম:
- Google Skillshop
- Udemy
- Muktopaath
✅ ফ্রিল্যান্সিংয়ের নতুন খাত:
- AI Chatbot Response Designer
- Remote Helpdesk Agent (Tier-2 or Tier-3)
বিশেষজ্ঞদের মতে, যেসব সেবাকর্মী কেবল স্ক্রিপ্ট মেনে কাজ করেন, তাদের স্থান দ্রুত দখল করে নিচ্ছে যন্ত্র। তবে মানবিক সহানুভূতি, ভাষার সূক্ষ্মতা, ও অনির্ধারিত সমস্যায় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা যাদের আছে, তারা এখনো অপরিহার্য।
📣 আপনি কি কাস্টমার সার্ভিসে কাজ করেছেন বা করছেন? প্রযুক্তির প্রভাব কতটা অনুভব করছেন? আমাদের জানান নিচের কমেন্টে।
👍 প্রতিবেদনটি ভালো লাগলে লাইক করুন
🔁 বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন
