Home Second Lead ছুরিকাঘাতে ঢাবি ছাত্রদল নেতা নিহত: উত্তপ্ত ক্যাম্পাস

ছুরিকাঘাতে ঢাবি ছাত্রদল নেতা নিহত: উত্তপ্ত ক্যাম্পাস

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছুরিকাঘাতে শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) নামে এক ছাত্রদল নেতা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৩ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন কালীমন্দিরের গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাম্য শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায়।

ঘটনার পর গুরুতর আহত অবস্থায় সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১২টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, সাম্যর ডান উরুতে ধারাল অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

সাম্যের দুই সহপাঠী বায়েজিদ ও রাফিও ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন। তারা জানান, কালীমন্দির সংলগ্ন ক্যান্টিনে আড্ডা শেষে বের হওয়ার সময় ৮-১০ জনের একটি দল তাদের ওপর হামলা চালায়। ঘটনার সূত্রপাত হয় বাইকের সঙ্গে ধাক্কা ও বাকবিতণ্ডা থেকে। পরে একাধিক বাইকযোগে আসা দুর্বৃত্তরা তাদের উপর হামলা চালায়। পুলিশ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে বলে জানিয়েছে শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মুনসুর।

ঘটনার পর ঢাবি শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে ভিড় করেন। একই রাতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ভিসির বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করে ছাত্রদল। তারা ভিসি ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দেয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরসহ সংগঠনের শীর্ষ নেতারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

তবে ছাত্রদলের এমন রাজনৈতিক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ঢাবির শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় ফেসবুক গ্রুপে তন্ময় মিরাজ নামে একজন লেখেন, “সাম্য ভাই আমাদের সবার, তাকে নিয়ে রাজনীতি না করে একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করাই উচিত ছিল।”

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী জুলহাস কবির লিখেছেন, “ভাইয়ের মৃত্যুর বিচার চাই, কিন্তু এর মাঝে লাশের রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছি। সবাইকে অনুরোধ করব, কেউ যেন রাজনীতি না করে বরং ক্যাম্পাসকে নিরাপদ রাখার আওয়াজ তোলে।”

ঢাবি কর্তৃপক্ষ এখনও এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, বাকি হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ঘটনায় ছাত্র রাজনীতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

বুধবার (১৪ মে) সকালে শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ খালিদ মুনসুর জানিয়েছেন, এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই গ্রেফতারকৃতদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।