Home সারাদেশ বৈষম্য বিরোধী নেত্রীকে মারধরের ঘটনায় ওসি প্রত্যাহার, গ্রেপ্তার ৬

বৈষম্য বিরোধী নেত্রীকে মারধরের ঘটনায় ওসি প্রত্যাহার, গ্রেপ্তার ৬

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ফরিদপুর:  নগরকান্দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী বৈশাখী ইসলাম বর্ষার ওপর হামলার ঘটনায় নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফর আলীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের ভবুকদিয়া এলাকায় থানায় অভিযোগ দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন বৈশাখী ইসলাম। তার দাবি, ছোট বোনকে উত্যক্তের বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ করার পরই পরিকল্পিতভাবে তার ওপর এই হামলা চালানো হয়। হামলার সময় তাকে রাস্তায় ফেলে কিল-ঘুষি ও লাথি মারা হয়। স্থানীয় শরীফ বেপারী নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে তিনি থানায় অভিযোগ দিয়েছিলেন।

ঘটনার পর শনিবার নগরকান্দা থানার ওসি সফর আলীকে  প্রত্যাহার করে ফরিদপুর পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. শামসুল আজম বলেন, “প্রশাসনিক কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

হামলার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুর শাখার মুখ্য সংগঠক শাহ মো. আরাফাতসহ অন্যান্য নেতারা। আরাফাত বলেন, “ভবুকদিয়ার ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ২০-২৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে যাই। কিন্তু প্রশাসনের কেউ সাড়ে তিন ঘণ্টা পরও আসেনি। এই নীরবতা অত্যন্ত দুঃখজনক।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আমরা যারা জেলা পর্যায়ে কাজ করি, আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে কেন্দ্রীয় নেতারা এসি গাড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এটা শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি।”

ভবুকদিয়ায় হামলার ঘটনায় বৈশাখী ইসলাম ফেসবুক লাইভে এসে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের দায়ী করেন। তার ভাষ্য, “বিএনপির লোকজন আমাকে রাস্তায় ফেলে মারধর করেছে।” যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করে নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান মোল্লা বলেন, “এই দুই পরিবারই আওয়ামী লীগ ঘরানার। এখানে বিএনপির সম্পৃক্ততা নেই।”

এ ঘটনায় নগরকান্দা থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

এদিকে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট এক বিবৃতিতে হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, “জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণ সন্ত্রাসের অবসান চেয়েছিল। কিন্তু রাজশাহী, চট্টগ্রামের পর এবার ফরিদপুরে সন্ত্রাসীরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর সঙ্গে বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো যুক্ত।”

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায়, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি তামজিদ হায়দার, ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকীসহ সাতটি ছাত্র সংগঠনের শীর্ষ নেতা। তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

এখন প্রশাসনের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। ওসি সফর আলীর প্রত্যাহার সেই দায় এড়ানোর পথ নয়-এমন মন্তব্যও উঠে এসেছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের তরফে।


➡️ বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন বিজনেসটুডে২৪.কম-এ
➡️ হামলার নেপথ্যে কে, কারা—আপনার মতামত দিন মন্তব্যে
➡️ ন্যায়বিচার নিশ্চিতে সোচ্চার হন, শেয়ার করুন প্রতিবেদনটি