Home জাতীয় ধর্ম উপদেষ্টার সতর্কতা: রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা

ধর্ম উপদেষ্টার সতর্কতা: রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা

মন্তব্য প্রতিবেদন

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন স্পষ্টভাবে বলেছেন যে তিনি বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতিকে সমর্থন করেন না। তার এই মনোভাবকে বোঝার জন্য আমরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক পর্যবেক্ষণ করতে পারি। তিনি উল্লেখ করেছেন, “পার্শ্ববর্তী দেশ ও ইউরোপে ছাত্র রাজনীতি নেই।” এটি ইঙ্গিত দেয় যে অনেক দেশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে আলাদা রেখেছে। ড. খালিদ হোসেন মনে করেন, ছাত্রদের মূল দায়িত্ব শিক্ষা গ্রহণ ও জ্ঞানার্জন হওয়া উচিত। রাজনৈতিক অংশগ্রহণ যদি শিক্ষার্থীদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাগত ও নৈতিক সময়কে প্রভাবিত করে, তবে তা দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার্থীর বিকাশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, দেশে রাজনীতিবিদরা ছাত্র রাজনীতিকে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এর অর্থ, রাজনৈতিক দলগুলো শিক্ষার্থীকে কেবল একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ব্যবহার করছে, যাতে তাদের ভোট, আন্দোলন বা চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এতে শিক্ষার্থীরা তাদের স্বাধীন চিন্তাভাবনা ও নৈতিকতার বিকাশে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।

বক্তব্য থেকে বোঝা যায় যে ড. খালিদ হোসেন শিক্ষার্থীদের নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধ রক্ষার উপর জোর দিচ্ছেন। তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীর মনোযোগ পড়াশোনা, নৈতিকতা ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের মূল লক্ষ্য থেকে সরে যায়। এটি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর ক্ষতি নয়, বরং সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্যও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

ছাত্র রাজনীতি যদি অবাধভাবে পরিচালিত হয় এবং রাজনৈতিক স্বার্থের হাতিয়ার হয়ে ওঠে, তা ভবিষ্যতে দেশীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। শিক্ষার্থীরা রাজনৈতিক লড়াই বা দলের স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত থাকলে, স্বাধীন চিন্তাভাবনা ও সততা বিকশিত হতে পারে না। ধর্ম উপদেষ্টার বক্তব্য এই সতর্কবার্তাও বহন করছে।

তিনি সরাসরি বলেননি যে ছাত্ররা রাজনীতি সম্পূর্ণ বাদ দিক, তবে পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত ও শিক্ষার মূল লক্ষ্যর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত। অর্থাৎ, শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক ব্যবহার রোধ করা এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে মনোযোগী হওয়া অত্যন্ত জরুরি।

ড. খালিদ হোসেনের বক্তব্য একটি নীতিগত ও সমাজিক সতর্কবার্তা। এটি শিক্ষার উদ্দেশ্য, শিক্ষার্থীর নৈতিক বিকাশ এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির সুস্থতা নিয়ে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। তার মন্তব্য থেকে বোঝা যায় যে, বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতি শুধু রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত ও সামাজিক বিকাশের জন্য হুমকিস্বরূপ। ধর্ম উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের মূল শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকার গুরুত্বে জোর দিয়ে বলেছেন যে, রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নৈতিক ও শিক্ষাগত সীমাবদ্ধতা থাকা অপরিহার্য।