বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা:
ছেঁড়া, পোড়া বা বিভিন্ন কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়া টাকার নোটের বিনিময় মূল্য ফেরতের বিষয়ে নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই নীতিমালার আওতায় এখন থেকে গ্রাহকরা নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ সাপেক্ষে যেকোনো ব্যাংক শাখা থেকেই নষ্ট নোটের বিনিময় মূল্য ফেরত পাবেন। নীতিমালাটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে। সার্কুলারে বলা হয়েছে, নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি ব্যাংকের প্রতিটি শাখাকে অপ্রচলনযোগ্য, ছেঁড়া, ফাটা বা ত্রুটিযুক্ত নোট বদলের সেবা দিতে হবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো টাকার নোটের ৯০ শতাংশের বেশি অংশ অক্ষত থাকলে গ্রাহকরা ওই নোটের পুরো মূল্য তাৎক্ষণিকভাবে ফেরত পাবেন। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক যেকোনো ব্যাংকের যেকোনো শাখায় নোট জমা দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিনিময় মূল্য নিতে পারবেন।
তবে কোনো নোটের ৯০ শতাংশ বা তার কম অংশ অক্ষত থাকলে কিংবা নোটটি অতিরিক্ত ময়লাযুক্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে বিনিময় মূল্য দেওয়া যাবে না। এ ধরনের নোটকে ‘দাবিযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে গ্রাহককে ব্যাংক শাখায় নোট জমা দিয়ে আবেদন করতে হবে। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে সর্বোচ্চ আট সপ্তাহের মধ্যে বিনিময় মূল্য ফেরত দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, গত ৯ অক্টোবর ‘নতুন নোট রিফান্ড রেগুলেশনস’ জারি করা হয়। এর আলোকে গত সোমবার এ নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্বভাবে টাকা বদলের সেবা বন্ধ করে দেওয়ায় সব ব্যাংক শাখার মাধ্যমে নোট বিনিময়ের সেবায় জোর দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে নোটের ব্যবহারযোগ্যতা ও বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে প্রচলিত নোটগুলোকে পাঁচটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো পুনঃপ্রচলনযোগ্য, অপ্রচলনযোগ্য, ছেঁড়া-ফাটা বা ত্রুটিযুক্ত, দাবিযোগ্য এবং আগুনে পোড়া নোট। পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট বাজারে চলবে। অপ্রচলনযোগ্য এবং ছেঁড়া-ফাটা বা ত্রুটিযুক্ত নোট যেকোনো ব্যাংকের যেকোনো শাখা থেকে বিনিময় করা যাবে।
দাবিযোগ্য নোটের ক্ষেত্রে ব্যাংক সরাসরি কোনো অর্থ প্রদান করতে পারবে না। আবেদন পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক নোট পরীক্ষা করে বিনিময় মূল্য দেওয়া যাবে কি না অথবা কত শতাংশ মূল্য দেওয়া হবে, সে সিদ্ধান্ত নেবে এবং তা সর্বোচ্চ আট সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে জানাবে।
আগুনে পোড়া নোটের ক্ষেত্রে ব্যাংক কোনো বিনিময় মূল্য দিতে পারবে না। এসব নোটের জন্য গ্রাহককে সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকের যেকোনো শাখা অফিসে আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনীয় যাচাই শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।
সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, প্রতিটি ব্যাংকের প্রতিটি শাখার দৃশ্যমান স্থানে ‘ছেঁড়া-ফাটা বা ত্রুটিপূর্ণ নোট বিনিময় ও দাবিযোগ্য নোটসংক্রান্ত সেবা প্রদান করা হয়’ মর্মে নোটিশ টানাতে হবে। কোনো ব্যাংক শাখা এ সেবা দিতে অনীহা প্রকাশ করলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
এ ছাড়া কোনো গ্রাহক জাল নোট বা ভিন্ন নোটের অংশ জোড়া দিয়ে বিনিময়ের চেষ্টা করলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ধরণের আরও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেতে ভিজিট করুন www.businesstoday24.com










