বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রশাসনিক ভবনের দেয়ালে শনিবার বিকেলে লেখা হয়— ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’। এ লেখা ঘিরে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা, আর এর সূত্র ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াহ্ইয়া আখতারের বিরুদ্ধে দুই নারী শিক্ষার্থীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার সূচনা
বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে প্রশাসনিক ভবনের মূল নাম লাল রঙে মুছে শিক্ষার্থীরা প্রতীকীভাবে নতুন নাম লেখেন। এসময় ঘটনাস্থলে যান উপাচার্য ইয়াহ্ইয়া আখতারসহ কয়েকজন কর্মকর্তা। অভিযোগ অনুযায়ী, দেয়াল লিখনের ছবি তুলছিলেন দুই নারী শিক্ষার্থী। তখন উপাচার্য তাদের থামিয়ে জেরা শুরু করেন।
একজন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন,
“আমি কৌতূহল থেকে ছবি তুলছিলাম। তখন ভিসি স্যার আমার আইডি কার্ড নিয়ে বলেন—‘তোমাদের পরিবারকে ডাকব।’ অথচ আমি কোনো লেখালেখি করিনি।”
অপর শিক্ষার্থী জানান,
“আমরা ছবি তুলে চলে যাচ্ছিলাম। তখন ভিসি স্যার ডেকে প্রশ্ন করতে থাকেন—কারা লিখেছে, কারা জড়িত। এরপর আমার বান্ধবীর আইডি কার্ড নেন ও তার ছবি তোলা হয়। পরে রেজিস্ট্রার যাওয়ার সময় বলেন—‘ছবি ডিলিট দিয়েছি, তবে ছবি পেতে দেরি হবে না।’”
প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষার্থীরা যখন ব্যক্তিগত তথ্য মুছে ফেলার অনুরোধ করেন, তখন উপাচার্য বরং নিয়োগ বোর্ডের স্বচ্ছতা নিয়ে বক্তব্য দিতে থাকেন। এসময় শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তোলেন—সংঘর্ষের দিনেও কেন নিয়োগ বোর্ড চলছিল? উত্তরে সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান।
প্রশাসনের বক্তব্য
সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন বলেন,
“প্রশাসনিক ভবনের নাম কেটে নতুন লেখা আগে কখনো দেখা যায়নি। নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের এমনটা করার অধিকার নেই।”
তবে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
অন্যদিকে উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াহ্ইয়া আখতার শুধু বলেন—
“দুঃখিত। আমি কথা বলতে পারব না।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি নিয়োগ নিয়ে নানা অভিযোগ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ছাত্রদের একাংশের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে নিয়োগ বাণিজ্য চলছে। দেয়াল লিখনটি সেই অসন্তোষেরই বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু ঘটনাটিকে ঘিরে উপাচার্যের সরাসরি শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র জব্দ ও পরিবারকে ডাকার হুমকি নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।