বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: সাত দফা দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে ঢল নেমেছে লাখো মানুষের। আজ শনিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলটির ইতিহাসের প্রথম একক সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ৯টার মধ্যেই সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। উদ্যানের ভেতর তো বটেই, বাইরে রাস্তাজুড়ে অবস্থান নিয়েছেন দলের হাজারো নেতাকর্মী ও সমর্থক।
জামায়াতের নেতাদের ভাষ্য, এটাই তাদের স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসমাগম। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে বাস, ট্রেন ও লঞ্চে করে রাজধানীতে পৌঁছাতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। ভোররাত থেকেই মিছিলের মধ্য দিয়ে তারা উদ্যানে প্রবেশ করেন।
এ সমাবেশকে ঘিরে জামায়াত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তৈরি করেছে দৃষ্টিনন্দন তোরণ, ঝুলিয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন। সমাবেশস্থলে নির্মাণ করা হয়েছে ১০০ ফুট লম্বা ও ৩৬ ফুট প্রশস্ত প্রধান মঞ্চ। বসার সুব্যবস্থা, এলইডি মনিটর ও উন্নত শব্দব্যবস্থাসহ সব আধুনিক সুবিধা এতে সংযুক্ত করা হয়েছে।
নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন রয়েছে জামায়াতের স্বেচ্ছাসেবকবাহিনী। আছে ওজু-নামাজ, মেডিকেল ও টয়লেট বুথের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা।
দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান এই মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজকের সমাবেশ থেকে নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা দেবেন তিনি। তার বক্তব্যে থাকবে ২৪ জুলাইয়ের ‘জনআকাঙ্ক্ষার অভ্যুত্থান’-এর চেতনার পুনরুজ্জীবন, গণহত্যার বিচার ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের আহ্বান।
দলের নেতাদের দাবি, এই সমাবেশের মাধ্যমে জামায়াত মাঠে ফেরার বার্তা দিতে চায়। অতীতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় যৌথ রাজনৈতিক কর্মসূচি করলেও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এককভাবে এত বড় সমাবেশ এই প্রথম।
গায়ে দাঁড়িপাল্লা ও স্লোগানযুক্ত গেঞ্জি, মাথায় জেলার নাম লেখা টুপি, কপালে দলীয় লোগো—এভাবেই নানা রঙে-রূপে হাজির হয়েছেন কর্মীরা। তাঁদের স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান—
‘তারুণ্যের প্রথম ভোট, চাঁদাবাজের বিপক্ষে হোক’
‘দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিন’
আজকের মহাসমাবেশে অংশ নিয়েছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ, জাতীয় নেতা, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এবং ‘জুলাই শহীদ’ পরিবারের সদস্যরাও।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক মাঠে যখন উত্তাপ বাড়ছে, ঠিক সেই সময় জামায়াতের এই বিপুল সমাবেশ বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে।
সমাবেশে জামায়াতের প্রধান ৭ দফা দাবি
- জুলাই গণহত্যার বিচার
- পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন
- নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন
- লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড
- বিচার বিভাগের স্বাধীনতা
- রাজনৈতিক সংস্কার
- জনআকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা
জামায়াতের টার্গেট ১৫ লাখ অংশগ্রহণকারী। আয়োজনে ব্যবহার হয়েছে প্রায় ১০ হাজার বাস, ট্রেন ও লঞ্চ।