বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, টেকনাফ ( কক্সবাজার): বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপে ব্যাপক দুর্যোগ দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দ্বীপে দমকা হাওয়ার সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। এতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় পাঁচ ফুট বেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। গলাচিপা, কোনাপাড়া ও দক্ষিণপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৫০টির বেশি ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
দ্বীপের চারপাশে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। জলোচ্ছ্বাসের ধাক্কায় ঘাটে নোঙরে থাকা পাঁচটি মাছ ধরার ট্রলার বিধ্বস্ত হয়েছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম জানান, দ্বীপের লোকজন চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রাতে বাতাস কিছুটা কমলেও এখনও সাগর উত্তাল। হোটেল, মোটেল এবং স্থানীয় বিএন স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
টানা চার দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সব ধরনের যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রলার চলাচল বন্ধ। ফলে দ্বীপবাসীর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিশেষ করে চাল, ডাল, তেল ও শুকনো খাবারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা মোহাম্মদ জমির বলেন, ‘জোয়ারের সঙ্গে সাগরের পানির উচ্চতা হঠাৎ করে অনেক বেড়ে যায়। চারদিক থেকে পানি এসে গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়ে। আমাদের বেশ কিছু ঘরবাড়ি পানির নিচে। অনেকেই খোলা জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে।’
দ্বীপের বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, আগে থেকেই বেড়িবাঁধ ও উপকূল রক্ষায় ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি বছর দুর্যোগে ভাঙন এবং জলাবদ্ধতা চরম আকার ধারণ করছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। তবে এখনো লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি। জনপ্রতিনিধিরা সজাগ রয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে চার দিন ধরে ট্রলার না যাওয়ায় খাদ্য সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে দ্রুত মালামাল পাঠানো হবে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়া কিছুটা উন্নতির সম্ভাবনা থাকলেও উপকূলীয় এলাকায় এখনই সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা রয়েছে।
👉 আরও খবর ও বিশ্লেষণ পেতে নিয়মিত ভিজিট করুন বিজনেসটুডে২৪.কম।
👉 প্রতিবেদনটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সঙ্গে।