আপনাদের সঙ্গে ভাগ করেছি স্মৃতি হাসান-এর লেখা “বৃষ্টির দিনে দেখা” ধারাবাহিক রোমান্টিক গল্প। এই গল্প পাঠকদের মধ্যে অসাধারণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। প্রতি পর্বের শেষে পাঠকরা পরবর্তী পর্বের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতেন। আপনারা যে উষ্ণ সাড়া এবং ভালোবাসা জানিয়েছেন, তা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার এক অসীম উৎস।
আপনাদের সেই প্রতিক্রিয়াকে সামনে রেখে, আজ থেকে আমরা শুরু করছি নতুন রোমান্টিক ধারাবাহিক গল্প। আশা করি, নতুন গল্পটিও আপনাদের হৃদয়ে জায়গা করে নেবে, চোখে জল এবং হৃদয়ে গন্ধ হবে, এবং প্রতিটি পর্বে আবেগের ছোঁয়া পাবেন।
রোমান্টিক ধারাবাহিক গল্প
ঝরে পড়া রোদ আর তোমার হাসি
স্মৃতি হাসান
ঢাকার এক শান্ত সকালে, হালকা কুয়াশা শহরের রাস্তায় ভেসে চলছিল। রিহানা তার কলেজের ব্যস্ত রুটিনে এগোচ্ছে, কিন্তু আজ যেন বাতাসে কিছু অদ্ভুত উচ্ছ্বাস মিশে আছে। রাস্তায় মানুষের ভিড়, গাড়ির হর্ন, বালিশের মতো হালকা কুয়াশা—সবকিছু মিলিয়ে যেন একটি নতুন অনুভূতির বার্তা দিচ্ছিল।
রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে বাসের দরজা খুলতেই চোখে পড়ল একজন যুবক। তার চেহারার অভিব্যক্তি সাধারণ, কিন্তু চোখে যেন গভীর আকাশের মতো রহস্য লুকানো। রিহানার চোখ তার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে লেগে গেল। মুহূর্তে সময় থমকে গেল, এবং হঠাৎ একটি অদৃশ্য সুতো তাদের দুজনের মধ্যে গেঁথে গেল।
“দেখা হবে কি…?”—মনেই বলল রিহানা, কণ্ঠে কিছু বলার সাহস হয়নি।
যুবকটি হালকা হাসল, যেন মনে করিয়ে দিচ্ছে, এই মুহূর্তটি শুধুই শুরু। তার হাসিতে ছিল অদ্ভুত আকর্ষণ, এক ধরনের শান্তি, যা রিহানার বুকের কাঁপন বাড়িয়ে দিল।
রিহানা তার কলেজের দিকে এগোল, কিন্তু মন বারবার সেই অচেনা চোখের দিকে ফিরে যাচ্ছে। তার হৃদয় অদ্ভুতভাবে উচ্ছ্বসিত, কেন জানে না। কলেজে পৌঁছে সে জানল, আজ তার ব্যস্ত ক্লাসেও মন একেবারেই অন্য দিকে।
দুপুরে রিহানা ক্যাফেটেরিয়ায় বসে থাকা অবস্থায় লক্ষ্য করল, সেই যুবকটি তার পাশের টেবিলে বসেছে। নীরব, শান্ত, এবং অচেনা হলেও কেমন যেন পরিচিত। তাদের চোখ মিলল, এবং এই এক মুহূর্তে যেন সারা শহর থমকে গেল।
“হ্যালো… তুমি?” যুবকটি আলতো কণ্ঠে বলল।
রিহানা হেসে কণ্ঠ মিলল না, শুধু চোখের ভাষায় জানাল, সে বুঝতে পারছে। কয়েক মিনিটের নীরব মুহূর্ত, তারপর হঠাৎ হেসে ফেলল দুজনই। যেন এই হাসিটিই তাদের গল্পের প্রথম সুর।
যুবকটি উঠে এবং বলল, “আমি রিয়াজ। আর তুমি?”
“রিহানা,” শব্দগুলো কোমল, কিন্তু হৃদয়ে প্রচণ্ড উত্তেজনা।
সেই মুহূর্তে, তাদের চোখ আবার মিলল। এবং রিহানা বুঝতে পারল, আজকের দিনটি শুধু কলেজের একটি সাধারণ দিন নয়। এটি নতুন গল্পের প্রথম পাতা, যা লেখা হবে হাসি, চোখের আলো, এবং হঠাৎ ঘটে যাওয়া মুহূর্তের মাধ্যমে।
রোদ এখন আরও ঝরে পড়ছে। ক্যাফেটেরিয়ার জানালা দিয়ে ঢুকছে এক ঝলমলে আলো, আর সেই আলো যেন তাদের চোখের মধ্যে নতুন আবেগের দ্যোতনা জ্বালিয়ে দিয়েছে। রিহানা জানে, এই দেখা শুধুই শুরু, আর সেই শুরুই তার জীবনে নতুন রোমান্টিক অধ্যায়ের দ্বার খুলছে।
মুহূর্তে ক্লাসের ঘণ্টা বাজল। রিহানা reluctantly উঠে দাঁড়াল, কিন্তু মন কেবল রিয়াজের দিকে লেগে আছে। তার হৃদয় জানে, এই পরিচয়, এই চোখের মিল, আর সেই হাসি, পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য অপেক্ষা করছে।










