বিনোদন ডেস্ক:
১৯৫০-এর দশকে হলিউডে যখন রূপালী পর্দার নায়ক বলতে বোঝাত সুদর্শন মুখ, তীক্ষ্ণ হাসি আর ক্যারিশমা, সেই সময়ের অন্যতম আইকন ছিলেন টনি কার্টিস। নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসের গলি থেকে উঠে এসে যিনি পরবর্তীতে হয়ে উঠেছিলেন ‘কন ফালদাস ই আ লো লোকো’ ছবিতে মার্লিন মনরোর সঙ্গে রোমান্স করা এক অনন্য নাম। তবে টনি কার্টিসের জীবনের উজ্জ্বলতার আড়ালে ছিল এক গভীর অন্ধকার।
টনি কার্টিসের জন্ম নিউইয়র্কের এক দরিদ্র অভিবাসী পরিবারে। বাবা ছিলেন হাঙ্গেরিয়ান-ইহুদি, একজন দর্জি। দারিদ্র্য এতটাই প্রকট ছিল যে, এক সময় তার ভাই ও তাকেও পাঠিয়ে দেওয়া হয় একটি অনাথ আশ্রমে। তার ভাইয়ের অকাল মৃত্যু মাত্র ১১ বছর বয়সে, কার্টিসকে এক গ্যাংয়ের সদস্য করে তোলে, যেখানে সে ছোটখাটো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে, বিশেষ করে দোকান চুরি।
তবে তার জীবন মোড় নেয় এক নতুন দিকে যখন তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নৌবাহিনীতে যোগ দেন। যুদ্ধক্ষেত্রে সরাসরি না গেলেও, প্রশিক্ষণের সময় তিনি সুযোগ পান থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত থাকার, এটাই হয়ে ওঠে তার অভিনয়ে হাতেখড়ি। তখন থেকেই তার ভেতরে জন্ম নেয় এক নতুন স্বপ্ন, হলিউডে অভিনয় করার।
যুদ্ধ শেষে ব্রডওয়েতে যোগ দেন কার্টিস। একদিন ইউনিভার্সাল পিকচার্স-এর এক খোঁজকারীর নজরে পড়েন তিনি। তখনই তার নাম পরিবর্তন হয় ‘অ্যান্থনি কার্টিস’। ইউনিভার্সাল তখন একটি তরুণ অভিনেতা-গোষ্ঠী তৈরি করছিল, যাদের মধ্যে ছিলেন রক হাডসন ও ক্লিন্ট ইস্টউডও। তাদের মূল কাজ ছিল সুইমিংপুলের ধারে স্টারলেটদের সঙ্গে ছবি তোলা।
কিন্তু ভাগ্য বদলে যায় ১৯৪৯ সালে, পরিচালক রবার্ট সিওডমাক তাকে “এল আব্রাজো দে লা মুয়ের্তে” ছবিতে একটি ছোট চরিত্রে সুযোগ দেন। সেখান থেকেই শুরু হয় তার পথচলা, যা তাকে নিয়ে যায় “দ্য ভাইকিংস” (১৯৫৮), “এসপারটাকো” (১৯৬০) এবং “লা কারেরা দেল সিগলো” (১৯৬৫)-এর মতো ছবির কেন্দ্রে।
টনি কার্টিস ছিলেন শুধুই এক ‘গালান’ নয়, বরং ছিলেন এমন এক চরিত্র, যিনি জীবনকে লড়াই করে জয় করেছেন। তার প্রতিটি অভিব্যক্তিতে ছিল অতীতের সেই বঞ্চনার ছাপ, আর ভবিষ্যতের প্রতি এক অদম্য আশা।