বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ন্যাচার মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণায় ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ
প্রতিদিন মাত্র এক গ্লাস কোমল পানীয় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে ৮ শতাংশ পর্যন্ত: নতুন গবেষণা
হেলথ ডেস্ক: প্রতিদিন মাত্র এক গ্লাস কোমল পানীয় খাওয়া আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে—এমনটাই জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের (IHME) নতুন গবেষণা। শুধু কোমল পানীয় নয়, প্রক্রিয়াজাত মাংস এবং ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবারও বাড়িয়ে দিচ্ছে টাইপ-২ ডায়াবেটিস, কোলন ক্যানসার ও হৃদ্রোগের মতো প্রাণঘাতী অসুস্থতার আশঙ্কা।
গবেষণাটিতে ৬০টিরও বেশি পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণার তথ্য বিশ্লেষণ করা হয় এবং রোগ-সম্পর্কিত বিভিন্ন খাদ্যাভ্যাসের ঝুঁকি মাপতে ব্যবহার করা হয় ‘বার্ডেন অব প্রুফ’ পদ্ধতি। এতে প্রতিটি উপাদানকে প্রমাণের শক্তির ওপর ভিত্তি করে রেটিং দেওয়া হয়।
মূল অনুসন্ধান:
- প্রতিদিন মাত্র এক গ্লাস (১২ আউন্স) চিনিযুক্ত কোমল পানীয় খাওয়ার ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে ৮ শতাংশ এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ে ২ শতাংশ।
- প্রতিদিন প্রক্রিয়াজাত মাংস খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে ১১ শতাংশ এবং কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি ৭ শতাংশ।
- ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণের ফলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ে ৩ শতাংশ।
গবেষণা দলের প্রধান বিজ্ঞানী ড. দেমেওজ হায়েল বলেন, “আমরা দেখতে পেয়েছি যে এমনকি অল্পমাত্রায় গ্রহণেও এসব খাদ্যপণ্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। এর মানে হচ্ছে, এর কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই।”
কেন এগুলো এত ক্ষতিকর?
- কোমল পানীয় শরীরে ইনসুলিন প্রতিরোধ তৈরি করে, ওজন বাড়ায় এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে।
- প্রক্রিয়াজাত মাংস (যেমন হটডগ, সসেজ, বেকন) সাধারণত নাইট্রাইটস ব্যবহার করে সংরক্ষণ করা হয়, যা পাকস্থলীতে ক্যানসার সৃষ্টিকারী যৌগে রূপান্তরিত হতে পারে।
- ট্রান্স ফ্যাট ভালো কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয় এবং খারাপ কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়, যা ধমনী বন্ধের ঝুঁকি তৈরি করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যেই ট্রান্স ফ্যাট নিষিদ্ধের উদ্যোগ নিয়েছে এবং কোমল পানীয়তে কর আরোপের প্রস্তাব দিয়েছে। এই গবেষণা সেই উদ্যোগকেই আরও জোরালো ভিত্তি দিয়েছে।
আপনার করণীয় কী?
- প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা থেকে কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত মাংস ও ট্রান্স ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার বাদ দিন বা যতটা সম্ভব কমিয়ে ফেলুন।
- পরিবর্তে খান তাজা ফলমূল, শাকসবজি, ডাল, পূর্ণ শস্য, খাঁটি দুধ ও দুধজাত খাবার এবং চর্বিহীন প্রোটিন।
এই প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য সাম্প্রতিক গবেষণার আলোকে উপস্থাপিত। তবে স্বাস্থ্যসম্পর্কিত যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।