Home First Lead বন্দরে ট্যারিফ: একতরফা সিদ্ধান্তে ক্ষোভ শিপিং এজেন্টদের

বন্দরে ট্যারিফ: একতরফা সিদ্ধান্তে ক্ষোভ শিপিং এজেন্টদের

নতুন ট্যারিফ স্থগিতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা 

রেডিসন ব্লুতে অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ী সভার সিদ্ধান্তের প্রতি সংহতি

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নতুন ট্যারিফ কাঠামো কার্যকরের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস্‌ এসোসিয়েশন (বিএসএএ) এক জরুরি সভা করেছে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর ২০২৫) বেলা ১১টায় মক্কা-মদিনা ট্রেড সেন্টারে অবস্থিত এসোসিয়েশনের কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় উপস্থিত সদস্য এজেন্টদের প্রতিনিধিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর জোরালো আপত্তি সত্ত্বেও বন্দর কর্তৃপক্ষ ১৪ অক্টোবর রাত ১২টার পর থেকে অতীব উচ্চ হারে নতুন ট্যারিফ কার্যকর করেছে। এই ট্যারিফে বিভিন্ন সেবা খাতে ১৯৮৬ সালের তুলনায় প্রায় ৭০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা ব্যবসায়ীদের মতে “অযৌক্তিক এবং অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর”।

সভায় জানানো হয়, ট্যারিফ পুনঃনির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস্‌ এসোসিয়েশন বিভিন্ন সময় লিখিতভাবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে আপত্তি জানিয়েছে। এমনকি ২ জুন ২০২৫ তারিখে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে স্টেকহোল্ডারদের মতামত গ্রহণ ও যাচাইয়ের জন্য একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়।

সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,

  • স্টেকহোল্ডারদের প্রস্তাব ৩০ জুন ২০২৫-এর মধ্যে জমা দেওয়ার কথা ছিল;
  • বন্দর কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে প্রস্তাব যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়;
  • এবং পর্যালোচনার পর সহনীয় ও গ্রহণযোগ্য ট্যারিফ প্রস্তাবনা পেশ করার কথা ছিল।

এসোসিয়েশন জানায়, তারা ৩ জুলাই বিস্তারিত মতামত ও লিখিত প্রস্তাব পেশ করেছিল। কিন্তু এসব যৌক্তিক প্রস্তাবনা উপেক্ষা করে কর্তৃপক্ষ ১৪ সেপ্টেম্বর গেজেট প্রকাশ করে নতুন ট্যারিফ ঘোষণা করে, যা ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর করা হয় এবং পরে তা ১৪ অক্টোবর রাত ১২টার পর কার্যকর করার তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, বন্দর ট্যারিফ পুনঃনির্ধারণে মূল স্টেকহোল্ডার—বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস্‌ এসোসিয়েশন, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ—এর মতামত সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে। এতে বিদেশি প্রিন্সিপ্যালরা ইতোমধ্যেই সারচার্জ আরোপের ইঙ্গিত দিয়েছেন, যা দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।

বক্তারা জানান, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও পোর্ট ইউজার্স ফোরামও এই ট্যারিফ বৃদ্ধির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

সভায় উপস্থিত প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ আমিরুল হকের নেতৃত্বে গত ১২ অক্টোবর রেডিসন ব্লু হোটেলে অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ী মহলের সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।

পরিশেষে, সভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়—নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ২ জুন অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয়ে পুনরায় সভা আয়োজন করে যৌক্তিক পর্যায়ে ট্যারিফ পুনঃনির্ধারণ করা জরুরি। সেই সঙ্গে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নতুন ট্যারিফ বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

সিটিএ:
👉 ব্যবসায়ীদের মতে, অতিরিক্ত ট্যারিফ বিদেশি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তারা দ্রুত প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ ও ট্যারিফ পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন।