আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বড় পররাষ্ট্র সফরে সোমবার সৌদি আরবের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। গাজা যুদ্ধের মধ্যেই এই সফরকে তিনি ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন, যেখানে কূটনৈতিক আলোচনার পাশাপাশি বড় ধরনের ব্যবসায়িক চুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে।
জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজ বিমান ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে ট্রাম্পের বিশেষ বিমান এয়ার ফোর্স ওয়ান। সফরে তিনি সৌদি আরব ছাড়াও কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করবেন। এছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনা এগোলে তুরস্কেও যেতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
সফরের প্রাক্কালে গাজা যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে এক মানবিক অগ্রগতি দেখা যায়—মার্কিন-ইসরায়েলি বন্দি এডান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দিয়ে রেড ক্রসের হাতে তুলে দেয় হামাস। এ খবর ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে নিজেই সাংবাদিকদের জানান, “এটা দারুণ খবর। তাঁর পরিবার ভাবছিল তিনি হয়তো মৃত, কিন্তু তিনি বাড়ি ফিরছেন।”
তবে নির্বাচনের আগে গাজা যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও ট্রাম্প সম্প্রতি সে বিষয়ে কিছুটা নিরুৎসাহী হয়ে পড়েছেন। এমনকি গাজা ইস্যু, ইয়েমেনে হুথিদের ওপর ইসরায়েলি হামলা এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গেও তাঁর মতভেদ বেড়েছে।
তবে ইরানের বিষয়ে কিছুটা আশাবাদী ট্রাম্প বলেছেন, “আমাদের আলাপ চলছে এবং ভালো কিছু হচ্ছে। তবে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র পেতে দেওয়া যাবে না।”
তিনি আরও জানান, এই সফরে গাজা যুদ্ধ নিয়ে অগ্রগতি আশা করছেন। “আমি আশা করি আরও কিছু বন্দিমুক্তি হতে পারে,” বলেন ট্রাম্প। হামাসও জানিয়েছে, তারা চায় ট্রাম্প এই যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুক। নেতানিয়াহু এই ইস্যুতে কাতারে মধ্যস্থতাকারী পাঠাবেন বলেও জানিয়েছেন।
এ সফরে ট্রাম্পের তুরস্ক সফর অনিশ্চিত হলেও তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যদি তুরস্কে শান্তি আলোচনা হয় এবং তা ফলপ্রসূ হয়, তবে তিনি সেখানে যোগ দিতে প্রস্তুত। এমনকি তিনি মনে করেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন ও জেলেনস্কিও সেখানে থাকতে পারেন—যা একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনের সম্ভাবনা তৈরি করছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদের এই সফরের শুরু করছেন সৌদি আরব থেকে—ঠিক যেমন ২০১৭ সালে তাঁর প্রথম বিদেশ সফরেও করেছিলেন। তবে এবার তাঁর সফরসূচিতে ইসরায়েল নেই।
এই সফরের মধ্য দিয়ে ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিচ্ছেন যে, উপসাগরীয় দেশগুলো শুধু রাজনৈতিক কৌশলে নয়, তাঁর ব্যবসায়িক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ।