বিনোদন ডেস্ক:
মাত্র ৩০ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন অভিনেত্রী তানিন সুবহা। মঙ্গলবার (১০ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ৫৭ মিনিটে রাজধানীর ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। দীর্ঘ এক সপ্তাহ লাইফ সাপোর্টে থাকার পর তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়।
পরিবারের সদস্যরা দুপুর থেকেই হাসপাতালের করিডোরে অবস্থান করছিলেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন সুবহার মা। পাশে থেকে তাকে সান্ত্বনা দেন সহকর্মী ও বন্ধু অভিনেতা জয় চৌধুরী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী মুক্তি ও শিরিন শিলাও। হাসপাতালের হিসাব বিভাগ থেকে নিয়মিত একজন প্রতিনিধি এসে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন এবং বিল পরিশোধের বিষয়ে তাগিদ দিচ্ছিলেন।
সুবহার হৃদযন্ত্র কিছুটা সচল থাকলেও মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে পড়ে। চিকিৎসকরা দুই দিন আগেই তাকে ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ ঘোষণা করেন। কিন্তু লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়ার জন্য অপেক্ষা চলছিল তার স্বামী জাহিদুর রহমানের অনুমতির। অবশেষে পারিবারিক সিদ্ধান্তে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ফজরের নামাজের পর তানিন সুবহার জানাজা সম্পন্ন হবে এবং পরে তাকে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার মোল্লারহাটে নিজ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে।

তানিন সুবহার মৃত্যুর মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন। সেখানে জীবনের প্রতি তার হতাশা, ভাঙাচোরা মন এবং একাকিত্বের কথা উঠে আসে। তিনি লেখেন, ‘‘এক সময় তুমি টের পাবে, তোমার আসলে কাউকেই দরকার নেই… কষ্টগুলো, হতাশাগুলো তোমাকে বদলে দেবে… তুমি আর আগের মতো থাকবে না…’’
গত ২ জুন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তানিন সুবহা। আফতাবনগরে একটি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর বাসায় ফিরলেও, সেই সন্ধ্যায় পুনরায় অসুস্থ হলে তাকে বনশ্রীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে রাতেই তাকে ধানমন্ডির ওই বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
২০১২ সালে ‘ক্লোজআপ ওয়ান-ম্যাঙ্গোলি নাচো বাংলাদেশ নাচো’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে আলোচনায় আসেন তানিন সুবহা। পরবর্তীতে বিজ্ঞাপনচিত্রের মাধ্যমে অভিনয়ে প্রবেশ করেন। নাটক ও সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি। ‘মাটির পরী’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হয় তার। মৃত্যুর আগে তিনি বেশ কয়েকটি সিনেমার শুটিং শেষ করেছিলেন, যেগুলোর মুক্তি এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।










