Home সারাদেশ উজানের পানিতে তিস্তা উত্তাল, বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই

উজানের পানিতে তিস্তা উত্তাল, বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই

নয়ন দাস, উত্তরাঞ্চলীয়  প্রতিনিধি, রংপুর: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ করেই বেড়ে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এতে কুড়িগ্রামসহ রংপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার তিস্তাপাড়ের নিচু এলাকার মানুষের মাঝে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে নদীতীরবর্তী অনেক ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে।

সোমবার সকাল ৯টায় কুড়িগ্রাম পয়েন্টে তিস্তার পানি ২৯ দশমিক ৯ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে, যেখানে বিপদসীমা ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার। দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ, যাতে নদীর পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পূর্বাভাস অনুযায়ী, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীগুলোর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও বাড়তে পারে। পরবর্তী দুই দিন এই পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে বলে জানানো হয়েছে। কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান আশঙ্কা করছেন, স্বল্পমেয়াদী হলেও কিছু ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি প্লাবিত হতে পারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা অববাহিকায় ১৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। রংপুরের কাউনিয়া গেজ স্টেশনে তিস্তার পানি ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। হাতীবান্ধার গড্ডিমারী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও ধানক্ষেত ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন ইউপি সদস্য নুর ইসলাম। তার ভাষায়, ‘টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পানিতে নিচু এলাকায় পানি ঢুকে পড়ছে।’

ডাউয়াবাড়ি ইউপির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের কিছু পরিবার ইতোমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

লালমনিরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার জানিয়েছেন, পানি বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকলে নিচু এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তিনি বলেন, “আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছি।”

চতুরা এলাকার বাসিন্দা মিলনের ভাষ্য, ‘পানি বাড়ছে বটে, তবে বন্যার মতন নয়।’ তবে সাধারণ মানুষের এই আশ্বস্তি কতটা স্থায়ী হবে, তা নির্ভর করছে আগামী এক-দুই দিনের বৃষ্টিপাত ও উজানের পানিপ্রবাহের ওপর।