পুলিশের নজরদারিতে উত্তেজনাহীন সমাপ্তি
আনোয়ার আহমেদ, কুয়ালালামপুর: মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে শনিবার সকালে বিরোধীদলীয় উদ্যোগে আয়োজিত ‘তুরুন আনোয়ার’ আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোর ৭টা থেকেই কালো পোশাক পরা ও সাদা হেডব্যান্ড পরিহিত হাজার হাজার বিক্ষোভকারী বিভিন্ন স্থান থেকে দাতারান মার্দেকার দিকে মিছিল করে এগিয়ে আসেন।
সমাবেশের মূল দাবিগুলোর মধ্যে ছিল প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের পদত্যাগ, অর্থনৈতিক ব্যর্থতা ও দুর্নীতির অভিযোগ। শহরের প্রধান প্রধান এলাকাগুলোর মধ্যে সোগো বিপণীবিতান, মসজিদ নেগারা, মাসজিদ জামেক সুলতান আবদুল সামাদ, পাসার সিনি ও কামপুং বারু জামেক মসজিদ ছিল বিক্ষোভকারীদের প্রধান জড়ো হওয়ার কেন্দ্র। এসব এলাকায় মালয়েশিয়ান রয়্যাল পুলিশ (পিডিআরএম) কঠোর নজরদারি চালায়, ড্রোন ইউনিটের মাধ্যমে করা হয় আকাশপথেও পর্যবেক্ষণ।
দুপুর ১টার পর দলে দলে বিক্ষোভকারীরা দাতারান মার্দেকার দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। মাসজিদ জামেক ও পাসার সিনি এলাকায় ছিল নিরাপত্তাবাহিনীর কড়া অবস্থান, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। বিকেল পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং কোনো গুরুতর বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি।
তবে দাতারান মার্দেকায় আন্দোলনকারীরা একটি অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করায় পুলিশের হস্তক্ষেপ ঘটে। কুয়ালালামপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশপ্রধান দাতুক মোহামেদ ইউসুফ জান মোহাম্মদ জানান, সংশ্লিষ্ট মঞ্চটির অনুমতি ছিল না এবং তা নিরাপত্তা মানদণ্ড পূরণ করেনি। তিনি বলেন, “কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে, যা নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি তৈরি করতে পারত।” আগে থেকে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয়ের অংশ হিসেবে শুধু দুটি চার-চাকার গাড়ি থেকে বক্তব্য দেওয়ার অনুমতি ছিল।
এদিকে কুয়ালালামপুর সিটি হল (ডিবিকেএল) জানায়, আয়োজকদের আনা তাঁবু ও অন্যান্য সামগ্রী সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, কারণ কেবল শহর কর্তৃপক্ষের যানবাহন সেখানে প্রবেশের অনুমতি পেয়েছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আন্দোলনের নানা দৃশ্য ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্র-সংগঠনের কর্মী, সামাজিক প্রভাবশালী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সক্রিয় উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। পাসার সিনিতে চলতে থাকে স্বতঃস্ফূর্ত স্লোগান ও সংক্ষিপ্ত বক্তব্য। মসজিদ নেগারা ও মাসজিদ জামেকে যোহরের নামাজে বিপুল সংখ্যক মুসল্লির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, অনেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বিক্ষোভকারীর অংশ ছিলেন।
পিএএস যুব শাখা আলাদা বিবৃতি দিয়ে সম্ভাব্য গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সহায়তা পেতে হটলাইন নম্বর প্রকাশ করে।
দুপুর ২টার দিকে দাতারান মার্দেকায় পৌঁছায় বিশাল জনতা, “তুরুন আনোয়ার” স্লোগানে মুখর হয় চারদিক। রাজনৈতিক নেতারা বক্তব্য দিতে শুরু করলে সমাবেশে আসে চূড়ান্ত উত্তেজনা। পিএএস ও পেরিকাতান ন্যাশনাল (পিএন) নেতারা জালান রজা লাউতের দলীয় কার্যালয় থেকে যোহর নামাজ শেষে মূল সমাবেশে যোগ দেন।
পিএএসের নিরাপত্তাকর্মী, জাবাতান আমাল স্বেচ্ছাসেবক, পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা সম্মিলিতভাবে জননিয়ন্ত্রণে কাজ করে যান।
👉 আরও আপডেট জানতে চোখ রাখুন businesstoday24.com–এ।