হেলথ ডেস্ক: নিজের জন্মদিনের রাতেই এক ভয়াবহ ঘটনার শিকার হয়েছিলেন ইস্তানবুলের বাসিন্দা ৪৫ বছর বয়সী আলি চিফচি। বাড়িতে চোর ঢুকে পড়লে তাকে বাধা দিতে গিয়ে ধস্তাধস্তির সময় তিন তলা থেকে নিচে পড়ে যান তিনি ও চোর দু’জনেই। দুর্ভাগ্যবশত, আলি প্রথমে মাটিতে পড়েন এবং তার শরীরের উপরেই পড়ে বসে চোর। এতে আলির মাথার খুলির প্রায় ৮৩ শতাংশ ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
অভিযোগ, আলিকে শরীরের এয়ারব্যাগ বানিয়েই দেয়াল টপকে পালিয়ে যায় চোর। সেই থেকে এখনও চোরকে ধরা যায়নি।
অত্যন্ত সংকটজনক অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা মাত্র ১০ শতাংশ। টানা ছয় মাস ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেন আলি। পরবর্তী দুই বছরে হয় একাধিক অস্ত্রোপচার। প্রাণে বেঁচে গেলেও মাথার গঠন সম্পূর্ণ বিকৃত হয়ে যায় তাঁর। যেন চুপসে যাওয়া বেলুনের মতো হয়ে গিয়েছিল খুলি।
অসহ্য যন্ত্রণা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার আতঙ্ক এবং চারপাশের মানুষের বিদ্রূপে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। বাধ্য হয়ে সারাক্ষণ টুপি পরে থাকতে হতো আলিকে।
অবশেষে চিকিৎসকেরা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেন অত্যাধুনিক থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তির মাধ্যমে টাইটেনিয়ামের একটি কৃত্রিম খুলি তৈরি করা হয়। তা নিখুঁতভাবে বসানো হয় আলির মাথায়। জটিল সেই অস্ত্রোপচার সফল হয়। ফিরে আসে মাথার স্বাভাবিক গঠন ও শক্তি।
হাসিমুখে আলি বলেন, “যখন আমি হাসপাতালে যেতাম, চিকিৎসকেরা বলতেন, ‘ওই যে, বিস্ময়-মানব এসে গেছে’।”
বর্তমানে দুই সন্তানের বাবা আলি সম্পূর্ণ সুস্থ। যন্ত্রণামুক্ত জীবনে ফিরেছেন তিনি। আর তাঁকে মাথা ঢাকার জন্য টুপি পরতে হয় না। ইস্তানবুলের এই ঘটনা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।