আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ‘দিটওয়াহ’ এবং এর পরবর্তী প্রবল বর্ষণ, আকস্মিক বন্যা ও ধারাবাহিক ভূমিধস শ্রীলঙ্কাকে ব্যাপক মানবিক সংকটে ঠেলে দিয়েছে। দেশের নানা প্রান্তে নদীর জলস্তর ঐতিহাসিক উচ্চতায় পৌঁছেছে, প্লাবিত হয়েছে ঘনবসতিপূর্ণ শহর ও বাণিজ্যকেন্দ্রগুলো, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেতু, রাস্তা, বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো।
সরকার জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে ‘রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৩ জনে, নিখোঁজ রয়েছে আরও অনেকে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ।
দেশটির মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দ্রুত বেগে ফুলে ওঠা নদীর স্রোতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ভেসে যাওয়ায় রাজধানী কলম্বোর সঙ্গে একাধিক জেলার সড়ক যোগাযোগ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। দেশজুড়ে দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে লক্ষাধিক পরিবার।
শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী যৌথভাবে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছে। নৌকা ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরুরি চিকিৎসা টিম পাঠানো হয়েছে।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য জরুরি আর্থিক সহায়তা এবং বাড়িঘর পুনর্নির্মাণে বিশেষ তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলোও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আবহাওয়া বিভাগ সতর্ক করেছে, আগামী ২৪ ঘণ্টাও ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের ঝুঁকি রয়ে গেছে। জনসাধারণকে উঁচুস্থানে অবস্থানের পাশাপাশি অপ্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।










