বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: নতুন কুঁড়ি ২০২৫ এর জাতীয় মঞ্চে আবৃত্তির আলো ছড়িয়ে দিল ছোট্ট সাবিলা সুলতান বাণী। যেন চট্টগ্রামের আকাশে এক নতুন তারা জ্বলে উঠল। মাত্র ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী হয়েও তার কণ্ঠে যে দৃঢ়তা, যে শব্দপ্রতিমার যাদু, তা মুগ্ধ করেছে বিচারক থেকে শুরু করে সারা দেশের দর্শকদের। খ বিভাগে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাণী শুধু একটি পুরস্কার অর্জন করেনি, বরং পুরো চট্টগ্রামকে গর্বের উজ্জ্বল আলোয় ভরিয়ে দিয়েছে।
পূর্ব বাকলিয়ার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ফজর আলী মুন্সির বাড়ির উঠোনে তার বেড়ে ওঠা। সকাল-বিকেল আবৃত্তির ছন্দে যাপিত সময় যেন ধীরে ধীরে তাকে তৈরি করেছে এক অনন্য কণ্ঠনটী হিসেবে। পূর্ব বাকলিয়া সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বাণী অতি অল্প বয়সেই উপলব্ধি করেছে শব্দের শক্তি, ছন্দের সৌন্দর্য আর উচ্চারণের নির্মল শৃঙ্খলা।
জাতীয় মঞ্চে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর তার হাতে উঠেছে নতুন কুঁড়ির স্বপ্নময় ট্রফি, অর্জন সনদ, দুই লক্ষ টাকার চেক এবং সবচেয়ে মূল্যবান স্বীকৃতি বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী হওয়া। যেন পুরস্কারের ঝুলি নয়, ভবিষ্যতের পথচলার জন্য আলোর দিশা।
এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে এক শিল্পীময় পরিবারের অবিচল সাপোর্ট। মা রাবেয়া সুলতান নিজেই জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত আবৃত্তিশিল্পী। আর বাবা টিপু সুলতান দেশের সুপরিচিত সংগঠন ‘ডাক দিয়ে যাই’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সভাপতি। শিল্পের অনুরাগ যেন এই পরিবারে বাতাসের মতো স্বাভাবিক। বড় বোনও জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত বক্তৃতা, আবৃত্তি ও বিতর্কে। ফলে বাণীর প্রতিটি পদক্ষেপ যেন পারিবারিক ঐতিহ্যেরই আরেকটি দীপ্ত প্রসার।
চট্টগ্রামে এখন উৎসবের আবহ। স্থানীয় শিক্ষক, শিল্পী এবং সংস্কৃতিপ্রেমীরা বলছেন, বাণীর আত্মবিশ্বাস, আবেগভরা পরিবেশন এবং সাবলীল উচ্চারণ তার সামনে আরও বিশাল এক আকাশ খুলে দেবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে অভিনন্দনের ঢল, যেন ছোট্ট এই কণ্ঠশিল্পীকে ঘিরে আনন্দের সমুদ্র।
নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে বাণী বলেছে, সে আবৃত্তিকে ভালোবাসে, আর জাতীয় মঞ্চে দাঁড়িয়ে দেশের সেরা হওয়ার অভিজ্ঞতা শব্দের ভাষায় ধরা কঠিন। সামনে সে আরও বড় স্বপ্ন দেখতে চায়, আরও বড় পথ পাড়ি দিতে চায়।
একটি ছোট মেয়ে, একটি বৃহৎ মঞ্চ এবং এক অমিত সম্ভাবনার গল্প এটি। সাবিলা সুলতান বাণী প্রমাণ করেছে স্বপ্নের পথে বয়স বাধা নয়। তার সাফল্য ভবিষ্যতের কণ্ঠশিল্পী, আবৃত্তিকার এবং সংস্কৃতিপ্রেমী শিশুদের অনুপ্রেরণার বাতিঘর হয়ে থাকবে চট্টগ্রাম থেকে দেশের প্রতিটি প্রান্তে।










