Home সারাদেশ কুষ্টিয়ায় চিকিৎসকের ওপর একদল নারীর বীভৎস হামলা

কুষ্টিয়ায় চিকিৎসকের ওপর একদল নারীর বীভৎস হামলা

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া শহরের অর্জুনদাস আগরওয়ালা সড়কে নারী চিকিৎসক শারমিন সুলতানার ওপর একদল নারীর বীভৎস হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গত সোমবার দুপুরে লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাওয়ার পর এই হামলার ঘটনা ঘটে, যখন সেখানে পূর্বপরিচিত কয়েকজন নারী তাঁকে রাস্তায় টেনে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন। হামলার সময় তাঁকে অভিযোগের মুখে বলা হয় যে, তিনি বিদেশে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, কিন্তু চাকরি দিতে পারেননি এবং টাকা ফেরত দিচ্ছেন না।

ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, ১৫-২০ জন নারী শারমিন সুলতানাকে সড়কে টেনে নিয়ে মারধর করছে। এ সময় তাঁর পোশাক ছিঁড়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় এবং কয়েকজন মারধর করে। হামলা শেষে শারমিন সুলতানাকে তাঁর স্বামী, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক মাসুদ রানা উদ্ধার করতে গিয়ে নিজেও হামলার শিকার হন। পুলিশ খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, হামলাকারীরা অভিযোগ করেন যে, শারমিন সুলতানা বিদেশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, তবে চাকরি দিতে পারেননি। কিন্তু পুলিশ তদন্তে জানায়, এ ধরনের অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কয়েকজন কর্মচারী জানান, তারা ঠেকানোর চেষ্টা করলে ওই নারীরা হামলা চালায়। স্থানীয়রা ইন্ধন দিয়ে নারীদের দিয়ে হামলা চালিয়েছে। চিকিৎসককে বেদম মারধর করা হয়েছে। তাদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে পুলিশকে জানাতে পারত।

এদিকে, চিকিৎসক শারমিন সুলতানার স্বামী কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাসুদ রানা বলেন, ‘আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে সেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। আমার স্ত্রী কোনো দিন মেহেরপুরে যাইনি। ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আমার স্ত্রীকে রোগী দেখার জন্য কল করে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই ওইসব নারীরা বসেছিল। এরপর তারা হামলা করে। আমি খবর শুনে সেখানে গেলে আমার ওপরও হামলার চেষ্টা চালানো হয়। আমি সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি এও জানান, হামলাকারীরা যেসব অভিযোগ তুলে মারধর করেছে, সেগুলোর পক্ষে কোন প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় স্থানীয় চিকিৎসক সমাজ এবং সাধারণ জনগণ প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।