Home বিনোদন কান উৎসবে নিষিদ্ধ নগ্ন পোশাক, শেষ নেকেড ড্রেসের যুগ?

কান উৎসবে নিষিদ্ধ নগ্ন পোশাক, শেষ নেকেড ড্রেসের যুগ?

বিনোদন ডেস্ক:

বিশ্ব ফ্যাশন অঙ্গনের আলোচিত এবং বিতর্কিত এক ট্রেন্ডের হয়তো এবার পরিসমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে। কান চলচ্চিত্র উৎসবের রেড কার্পেটে আর দেখা যাবে না ‘নেকেড ড্রেস’। মঙ্গলবার (১৩ মে) থেকে শুরু হওয়া উৎসবের নতুন ড্রেস কোডে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে “শালীনতার কারণে নগ্নতা নিষিদ্ধ, রেড কার্পেট বা উৎসবের অন্য যেকোনো এলাকায়।”

এ সিদ্ধান্ত শুধু পোশাক নয়, নারী স্বাধীনতা ও প্রকাশভঙ্গি নিয়েও নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই লেস, জালি, মেশ ও চেইনমেইলের মতো স্বচ্ছ উপাদানে তৈরি পোশাকগুলো রেড কার্পেটে সাহসী উপস্থিতি হিসেবে বিবেচিত হতো। তবে কেউ এই ট্রেন্ডকে নারী ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে দেখেছেন, আবার কেউ এটিকে বলপূর্বক যৌনীকরণের একপাক্ষিক সংস্কৃতি বলেই মনে করেন।

২০২৪ সালের কানে বেল্লা হাদিদ, এল ফ্যানিং, ইভা গ্রিন ও নাওমি ক্যাম্পবেলের মতো তারকারা স্বচ্ছ পোশাকে নজর কাড়েন। বিশেষ করে বেল্লা হাদিদের সেন্ট লরেন্টের কারামেল রঙের হাল্টারনেক গাউন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় শিরোনাম হয়েছিল। কিন্তু এ বছর সেই ধরনের উপস্থিতিকে আর কোনো স্থান দেওয়া হবে না।

“আমার শরীর নয়, পোশাক দেখুক দর্শক” এই চেতনায় অনুপ্রাণিত লেখিকা বিলি ভাটিয়া বলেন, “আমি শরীর নিয়ন্ত্রণ সমর্থন করি না, কিন্তু কোনো ঐতিহ্যবাহী উৎসবের মর্যাদা রক্ষা করাটাও কি খুব দোষের?”

অন্যদিকে, ফ্যাশন রেন্টাল প্ল্যাটফর্ম ‘বাই রোটেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা ইশিতা কবরা-ডেভিস মনে করেন, “এই পোশাকগুলো শিল্প, এবং নারীর শরীরের উদযাপন। নিষেধাজ্ঞা দিলে সেই শিল্পকেই অপমান করা হয়।”

রেড কার্পেটের এই পরিবর্তন নতুন কিছু নয়। ২০১৮ সালে অভিনেত্রী ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট উচ্চ হিল বাধ্যতামূলক হওয়ার প্রতিবাদে মাঝ রেড কার্পেটে নিজের জুতা খুলে ফেলেছিলেন। এবার ‘নেকেড ড্রেস’ বিতর্কও হয়তো তেমনই প্রতিবাদের জন্ম দেবে।

এই পোশাকের ইতিহাসও কম বিতর্কিত নয় মেরিলিন মনরোর বিখ্যাত ‘হ্যাপি বার্থডে’ গান গাওয়ার সময়ের স্বচ্ছ গাউন থেকে শুরু করে কিম কার্দাশিয়ানের ২০২২ সালের মেট গালায় সেই একই গাউন পরে হাজির হওয়া সবই দেখিয়েছে, এই ট্রেন্ড কতটা সাংস্কৃতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।

তবে এটি যে সৌন্দর্যের একচেটিয়া মানদণ্ডও তৈরি করেছে, তা বলছেন অনেকেই। ৫৭ বছর বয়সী ডাভিনা ম্যাককলের ২০২৫ সালের ব্রিট অ্যাওয়ার্ডসে সাহসী স্বচ্ছ পোশাক পরা যেমন প্রশংসিত হয়েছে, তেমনি বিরূপ মন্তব্যেরও শিকার হয়েছেন তিনি। আর এই ট্রেন্ডে যারা জায়গা পান, তাদের বেশিরভাগই স্লিম নারী যা আরও একধরনের সৌন্দর্য রাজনীতির ইঙ্গিত দেয়।

সম্ভবত কান উৎসবের এই নিষেধাজ্ঞা আমাদের সেই দিকেই ভাবতে বাধ্য করছে কোন পোশাক নারীর ক্ষমতায়ন আর কোনটা নিছক প্রদর্শন?