বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হচ্ছে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর সম্ভাব্য জোটে এবার গুরুত্ব পাচ্ছে ইসলামী দলগুলো। ইতিমধ্যে চট্টগ্রামের তিনটি আসনে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি-ভুজপুর), চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী-বায়েজিদ বোস্তামী) এবং চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) ইসলামী দলগুলোর শীর্ষ নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন। বিএনপি’র পক্ষ থেকেও এসব আসন ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখা গেছে বলে ইসলামী দলগুলোর ঘনিষ্ঠ সূ্ত্রে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি-ভুজপুর) আসনে নেজামে ইসলাম পার্টির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা শেখ মোহাম্মদ শাহজাহান, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী-বায়েজিদ বোস্তামী) আসনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা নাসির উদ্দীন মুনির এবং চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে নেজামে ইসলাম পার্টির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী প্রার্থী হিসেবে প্রচারণায় সক্রিয় রয়েছেন।
এ তিন আসনেই ইসলামী প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতি এবং তাদের সামাজিক ভিত্তি বিএনপি’র জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে ফটিকছড়ি ও হাটহাজারীতে দীর্ঘদিন ধরে কওমি মাদ্রাসা ঘরানার নেতাদের প্রভাব থাকায় ইসলামী ভোটব্যাংককে একত্র করা সম্ভব হলে বিএনপি জোটের জন্য এসব আসন জয়ের সম্ভাবনা বাড়বে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।
ইসলামী দলগুলোর একাধিক সূত্র জানায়, আসন্ন নির্বাচনে “এক বাক্সে ভোট” দেওয়ার কৌশল নিয়ে একাধিক অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে ইসলামী দলগুলোর জন্য অন্তত ১২টি আসন ছাড়ার বিষয়ে বিএনপি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে, যার মধ্যে চট্টগ্রামের এই তিনটি আসন অন্যতম।
গত আগস্টে বিএনপি’র একটি প্রতিনিধিদল হেফাজতে ইসলামের আমীর মাওলানা শাহ মুহিববুল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে বাবুনগর মাদ্রাসায় সাক্ষাৎ করেন। সেখানে ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে বৃহত্তর ঐক্য গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ তখন বলেছিলেন, “হেফাজতে ইসলাম রাজনৈতিক সংগঠন নয়, তবে হেফাজতের সঙ্গে যুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি।”
চট্টগ্রাম-১২ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, “ধর্মীয় মূল্যবোধ ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। বিএনপি’র সঙ্গে আলোচনা ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে।”
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, চট্টগ্রামে ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে জোট করলে বিএনপি ঐতিহ্যগতভাবে আওয়ামী লীগ-ঘেঁষা কিছু আসনেও নতুন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পাবে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফেরার পর নেবে বলে জানা গেছে।
এই প্রেক্ষাপটে চট্টগ্রামের রাজনীতিতে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয়—বিএনপি কি ইসলামী ভোটব্যাংককে কৌশলগতভাবে একত্র করতে পারবে, নাকি মনোনয়ন ভাগাভাগি নিয়ে নতুন দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হবে।









