Home সারাদেশ পরকীয়ার বিষে ভাঙলো পরিবার, নিভলো জীবন

পরকীয়ার বিষে ভাঙলো পরিবার, নিভলো জীবন

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পরকীয়ার জেরে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন এক পুলিশ কনস্টেবল। নিহত হুমায়ুন কবির (৪৪) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পরিবহন বিভাগে জলকামান চালকের দায়িত্বে ছিলেন। তারই স্ত্রী সালমা বেগম (৩২), বান্ধবী মরিয়ম বেগম (৩৮) ও প্রেমিক রাজিব হোসেন (২৬) মিলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার সকালে যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জ বটতলার ভাড়া বাসার নিচ থেকে হুমায়ুনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গলায় কালো দাগ, চোখে আঘাতের চিহ্ন এবং নাক-কান দিয়ে রক্ত ঝরার প্রেক্ষিতে এটি হত্যাকাণ্ড বলেই নিশ্চিত হয় পুলিশ। বাসার দরজাও বাইরে থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।

নিহতের ছোট ভাই খোকন হাওলাদার বাদী হয়ে সালমা, মরিয়ম এবং রাজিবসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ঘটনায় পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হুমায়ুনের স্ত্রী সালমা বেগম (৩২) এবং তার বান্ধবী মরিয়ম বেগম (৩৮) নামে এক নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এখনো গ্রেফতার হয়নি রাজিব হোসেন (২৬) নামের সেই প্রেমিক । এদিকে মামলার তদন্তে উঠে আসে রোমহর্ষক তথ্য। প্রেমিক রাজিব হোসেন, হুমায়ুনের আত্মীয়, তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর বড় ভাই। এই সম্পর্কের সুবাদে রাজিবের ঘন ঘন বাসায় যাতায়াত চলত। সেই সুযোগে স্ত্রী সালমার সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

হুমায়ুন বিষয়টি বুঝতে পেরে সালমাকে বারবার সতর্ক করেন, সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ক্ষমাও করে দেন। ২৫ এপ্রিল পারিবারিক এক শালিস বৈঠকে সালমা অনৈতিক সম্পর্ক ত্যাগের প্রতিশ্রুতি দিলেও, কিছুদিনের মধ্যেই তার ক্ষোভ চরমে ওঠে।

এই ক্ষোভ থেকেই হত্যার পরিকল্পনা করেন সালমা। রাজিব ও বান্ধবী মরিয়মকে নিয়ে ২৭ এপ্রিল রাতে হুমায়ুনকে হত্যা করেন বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন তিনি।

হুমায়ুনের ছেলে কাওসার (১৩) ও মেয়ে তুবা (৭) জানায়, রোববার রাতে বাবা বাড়ি ফিরে খাওয়া-দাওয়া করে নিজ কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোরে স্থানীয়রা লাশ দেখে চিৎকার শুরু করলে ঘটনা জানাজানি হয়।

যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, “হুমায়ুন বারবার চেষ্টা করেছেন স্ত্রীকে সঠিক পথে ফেরাতে। কিন্তু পরকীয়া সম্পর্ক আর মানসিক ক্ষোভ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।”

ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. হারুন অর রশিদ জানান, “এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। প্রেমিক রাজিবকে ধরতে অভিযান চলছে।”