বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: কাশ্মীরের পাহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পরে ফের চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে। ভারতের অভিযোগ, এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদত রয়েছে। যদিও ইসলামাবাদ এই দাবি সরাসরি অস্বীকার করেছে। এরই মাঝে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার জানিয়েছেন, তাদের কাছে “বিশ্বস্ত গোয়েন্দা তথ্য” রয়েছে যে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে।
মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে তারার বলেন, “পাকিস্তান দৃঢ়তার সঙ্গে ভারতের ভিত্তিহীন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছে। ভারত এখন বিচারক, অভিযুক্ত ও রায়দাতা—এই তিনটি ভূমিকাই নিজেই নিতে চাইছে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন।”

এর আগে একই দিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সামরিক ও নিরাপত্তা প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং সেনাবাহিনীকে “সম্পূর্ণ অপারেশনাল স্বাধীনতা” দেন। তিনি বলেন, “জবাব কীভাবে, কখন ও কোথায় দেওয়া হবে—সেই সিদ্ধান্ত সেনাবাহিনী নেবে।”
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, হামলার তদন্ত একটি নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক কমিশনের মাধ্যমে করা হোক। কিন্তু ভারত তা গ্রহণ না করে যুদ্ধোন্মাদনার দিকে ঝুঁকছে বলেই অভিযোগ ইসলামাবাদের। আতাউল্লাহ তারার আরও বলেন, “এই অঞ্চলে উত্তেজনার দায়ভার ভারতেরই নিতে হবে যদি পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যায়।”
এদিকে সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (LoC)-তে টানা পাঁচ দিন ধরে গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তানের দাবি, তারা ভারতীয় একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় সংঘাতের ঝুঁকি এখন তীব্র। তিনি পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য সংলাপ শুরু করার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন, পাকিস্তান শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষেই রয়েছে। তবে প্রয়োজনে নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ জবাব দেওয়া হবে।
এই মুহূর্তে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার পারদ চরমে। পর্যবেক্ষকদের মতে, যদি কূটনৈতিকভাবে বিষয়টির সমাধান না হয়, তাহলে দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে।