বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সিলেটে পাথর লুটপাটে প্রশাসনের যোগসাজশ কিংবা নীরবতা ছিল। এ বিষয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দ্রুতই সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে তিনি একনেক সভায় অংশ নেন।
সিলেটে পাথর লুটপাট প্রসঙ্গে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জনগণের শক্তিই শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়। রাজনৈতিক সমর্থন থাকলেও জনগণ রুখে দাঁড়ালে লুটেরা চক্র টিকতে পারে না।
তিনি জানান, ২০১১ সালে হাইকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে জাফলংয়ের পিয়াইন ও ডাউকি নদীকে ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া (ইসিএ) ঘোষণার উদ্যোগ নেওয়া হয়। দীর্ঘ আন্দোলনের পর ২০১৯ সালে সরকার এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে। ফলে ২০২০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ওই এলাকায় পাথর উত্তোলন বন্ধ ছিল।
তবে প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা না থাকায় লুটপাট চলতে থাকে। “আমরা ফিল্ডে গিয়েছিলাম বার্তা দিতে যে সরকার চুপ করে নেই। কিন্তু ফেরার সময় আমাদের গাড়িতে হামলা হয়। এতে বোঝা যায়, পাথর লুটের পেছনে শক্তিশালী ঐক্য গড়ে উঠেছে, যেখানে প্রশাসন হয়তো যোগসাজশে ছিল, নতুবা নীরব থেকেছে।”
রিজওয়ানা হাসান বলেন, যারা আজ শ্রমিকদের দুঃখে দুঃখ প্রকাশ করছে, তারাই আগে ডিনামাইট দিয়ে পাথর তুলে বহু শ্রমিককে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। শুধু জাফলংয়েই অন্তত ৬৫–৮০ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পরিবহন মালিকরা অতীতেও ধর্মঘটের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করেছেন। করোনার মতো সংকটকালেও তারা স্বার্থসিদ্ধির জন্য ধর্মঘট ডাকেন। এবারও সর্বদলীয় চাপের কারণে প্রশাসন নীরব থেকেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, জনগণের প্রতিবাদেই লুটেরা গোষ্ঠী চাপে পড়েছে। “মানুষ দাঁড়ালে রাজনৈতিক শক্তি টিকতে পারে না।” তিনি জাফলং ও সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, “আমি সিলেটের মানুষ। যে জাফলং আমি দেখেছি, আজকের প্রজন্ম তা দেখেনি। আমরা চাই জাফলং তার স্বাভাবিক রূপ ফিরে পাক।”