হেলথ ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো সময় পিঠে ব্যথার সমস্যায় ভোগেন। এর মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ দীর্ঘমেয়াদি, অর্থাৎ ক্রনিক ব্যাক পেইন-এ আক্রান্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তরুণদের মধ্যে এই সমস্যা বাড়ছে। অবসরে অতিরিক্ত বসে থাকা, মোবাইল বা ল্যাপটপের দিকে ঝুঁকে থাকা ও দৈহিক নিষ্ক্রিয়তার কারণে।
কিন্তু এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির পথ আছে। মায়ো ক্লিনিকের নিউরোসার্জন ডা. মেগান মারফি মনে করেন, পিঠের বেশিরভাগ ব্যথা প্রতিরোধ করা সম্ভব যদি কিছু সহজ নিয়ম মেনে চলা যায়।
১. আদর্শ ওজন ধরে রাখুন
শরীরে অতিরিক্ত ওজন থাকলে তার প্রভাব পড়ে মেরুদণ্ডের নিচের অংশে। এতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যথা বাড়ে, জটিলতা তৈরি হয়।
ডা. মারফির ভাষায়, “ওজন বেশি হলে শরীরের সব জয়েন্টেই চাপ পড়ে। পিঠের হাড় ও ডিস্কগুলো বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
২. মূল পেশিগুলো শক্তিশালী করুন
পেট, পিঠ ও কোমরের পেশিগুলো মেরুদণ্ডকে সাপোর্ট দেয়। তাই এগুলো যত শক্তিশালী হবে, পিঠের ওপর চাপ তত কম পড়বে।
তিনি বলেন, “যাদের ব্যথা আছে, তাদের শরীর বুঝে ব্যায়াম বেছে নিতে হবে। তবে হালকা স্ট্রেচিং, ইয়োগা বা ‘বার্ড ডগ’ জাতীয় এক্সারসাইজগুলো বেশ কার্যকর।”
৩. দৈনন্দিন চলাফেরা বজায় রাখুন
ডা. মারফির মতে, ব্যথা হলেই বিছানায় শুয়ে থাকা সঠিক পন্থা নয়। বরং এটি পেশি শক্তি কমিয়ে দেয়, ব্যথাকে দীর্ঘায়িত করে।
তিনি বলেন, “ব্যথা থাকলে হালকা হাঁটা, পানিতে সাঁতার কাটা বা অন্যান্য লো-ইমপ্যাক্ট ব্যায়াম উপকারী হতে পারে। কিন্তু যেকোনো রকম মোচড়, ভার উত্তোলন বা ঝুঁকে কাজ করা এড়িয়ে চলতে হবে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী, সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার শরীরচর্চা এবং ২ দিন শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম করা উচিত।
মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক
পিঠে ব্যথায় ভোগা ব্যক্তিদের এক-চতুর্থাংশই নিজেকে শারীরিকভাবে অক্ষম মনে করেন। আবার তাদের অনেকেই বিষণ্নতায় ভোগেন, আত্মসম্মানবোধ হারান। মানসিক অবসাদ ব্যথাকে আরও প্রকট করে তোলে।
তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ব্যথার সঙ্গে সঙ্গে মন ভালো রাখার বিষয়েও সচেতন থাকা জরুরি। প্রয়োজনে কাউন্সেলিং বা মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।