বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, পটিয়া : চট্টগ্রামের পটিয়ায় পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা থানা ঘেরাও ও মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন। বুধবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে তাঁরা পটিয়া থানার সামনে অবস্থান নেন এবং বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মহাসড়কেও।
নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে তাঁদের ওপর পুলিশের দুই দফা হামলায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের শাস্তি ও পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে অবরোধ শুরু করেন আন্দোলনের একটি অংশ। এতে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পথচারী ও যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। সরেজমিনে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা মহাসড়কের ওপর বসে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এবং পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন। অপরদিকে, থানা চত্বরে পুলিশ অবস্থান নিয়ে মূল ফটক বন্ধ করে রেখেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগর শাখার নেতারা জানান, বুধবার সকালে তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে থানার সামনে অবস্থান নিতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে একজন কর্মী আহত হন।
সংঘর্ষের সূত্রপাত মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে। প্রত্যক্ষদর্শী, আন্দোলনকারী ও পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, পটিয়ার শহীদ মিনার এলাকা থেকে ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করে আন্দোলনকারীরা থানায় নিয়ে আসেন। পুলিশের দাবি, আটক ব্যক্তির নামে কোনো মামলা না থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করতে রাজি হয়নি পুলিশ। এ নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে উত্তেজনা শুরু হয় এবং প্রথম দফা সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ।
সংগঠনের মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক রিদওয়ান সিদ্দিকীর দাবি, প্রথম দফার সংঘর্ষে তাঁদের ছয় জন আহত হন। রাতে সাড়ে এগারোটার দিকে আবার সংঘর্ষ হয়। তখন আরও নয়জন আহত হন বলে জানান তিনি।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জাহেদ মো. নাজমুন নূর রাতেই গণমাধ্যমকে বলেন, আন্দোলনকারীরা থানায় ঢুকে পড়তে চাইলে বাধা দেওয়া হয় এবং ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরাও আহত হন।
ওসি আজ বুধবার সকালে সাংবাদিকদের ফোন ধরেননি, ফলে পুলিশের পক্ষ থেকে নতুন করে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনার প্রতিবাদে সকাল থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাশাপাশি জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীরাও কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছেন। এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক জোবাইরুল হাসান আরিফ বলেন, তাঁদের ৪০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন এবং তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
পটিয়া থানার সামনে ও আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয়রা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।