Home আন্তর্জাতিক থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বরখাস্ত: আদালতের স্থগিতাদেশে রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বরখাস্ত: আদালতের স্থগিতাদেশে রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী পেতংতর্ণ সিনহাওত্রকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার ঘটনায়। থাই সাংবিধানিক আদালতের এক ঐতিহাসিক রায়ে মঙ্গলবার তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

আদালতের নির্দেশে বলা হয়, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা নৈতিক ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি আর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। এই সিদ্ধান্তের পরপরই ব্যাংককের রাজপথে শুরু হয় নতুন করে বিক্ষোভ।

কী কারণে বরখাস্ত

সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপ ঘিরে শুরু হয় এই বিতর্ক। অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী পেতংতর্ণ এক গোপন কথোপকথনে প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং রাজতন্ত্র নিয়ে এমন মন্তব্য করেন, যা সংবিধানের অনুচিত লঙ্ঘন। সেনেটের ৩৬ জন সদস্য যৌথভাবে আদালতে অভিযোগ জমা দেন। তদন্ত শুরু হলে আদালত তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ হিসেবে তাকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়।

কে হচ্ছেন অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পেতংতর্ণকে সরিয়ে আপাতত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুয়াংরুয়াংকিটকে। তবে পেতংতর্ণ এখনো মন্ত্রিসভায় সংস্কৃতি মন্ত্রীর দায়িত্বে বহাল থাকবেন, যদিও তাঁর ক্ষমতা এখন অনেকটাই সীমিত।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

প্রধানমন্ত্রী পেতংতর্ণ থাকসিন সিনহাওত্র পরিবারের সদস্য। থাই রাজনীতিতে সিনহাওত্র পরিবারের আধিপত্য দীর্ঘদিনের। তাঁর বাবা থাকসিন সিনহাওত্র ২০০৬ সালে ও ফুফু ইংলাক সিনহাওত্র ২০১৪ সালে সামরিক হস্তক্ষেপ ও আদালতের নির্দেশে ক্ষমতা হারান। এবার সেই ধারাবাহিকতায় তৃতীয় সদস্য হিসেবে পেতংতর্ণ পদচ্যুত হলেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আদালতের এই সিদ্ধান্ত থাইল্যান্ডের গণতান্ত্রিক ধারাকে আরও দুর্বল করে দিতে পারে। অনেকেই অভিযোগ করছেন, আদালত ও সামরিক ঘরানার রাজনৈতিক প্রভাব এখনও প্রভাব বিস্তার করছে প্রশাসনে।

কী হতে পারে সামনে

আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী পেতংতর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের সুযোগ রয়েছে। তাঁর লিখিত জবাবের ভিত্তিতে আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এরইমধ্যে সংসদে আস্থা ভোটের দাবিও উঠছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

এদিকে বিরোধী দল ও রাস্তায় বিক্ষোভরত জনগণের একাংশ এই বরখাস্তকে গণতন্ত্রবিরোধী ‘চক্রান্ত’ আখ্যা দিয়েছে। ব্যাংককসহ বিভিন্ন শহরে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ মিছিল।