Home Second Lead রপ্তানি আদেশ সচল, পোশাক খাতে স্বস্তির হাওয়া

রপ্তানি আদেশ সচল, পোশাক খাতে স্বস্তির হাওয়া

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক হ্রাস করায় আবার সচল হচ্ছে এক সময় স্থগিত হওয়া রপ্তানি আদেশ। এতে স্বস্তি ফিরেছে বাংলাদেশের রপ্তানিকারক ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্রেতা উভয় পক্ষেই। উদ্যোক্তারা বলছেন, সাময়িকভাবে কিছুটা ধাক্কা লাগলেও দীর্ঘমেয়াদে এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের রপ্তানির পরিধি ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হবে।

দীর্ঘ আলোচনার পর গত ১ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক নির্ধারণ করে, যা চীন ও ভারতের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হার বাংলাদেশের জন্য মার্কিন বাজারে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের বার্ষিক রপ্তানি প্রায় ৮৪০ কোটি মার্কিন ডলার, যার মধ্যে প্রায় ৭০০ কোটি ডলারই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। শুল্ক হ্রাসের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরপরই পূর্বে স্থগিত হওয়া অনেক ক্রয়াদেশ নিয়ে আবার আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছেন মার্কিন ক্রেতারা। উদ্যোক্তারা আশা করছেন, কোনো আদেশই বাতিল হবে না; বরং চীন ও ভারতের বাজারের কিছু অংশ হারিয়ে বাংলাদেশই হয়ে উঠবে তাদের নতুন নির্ভরযোগ্য উৎস।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘অন্য দেশগুলোর শুল্ক হার যদি একই থাকে, তাহলে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক, প্রতিযোগিতামূলক মূল্য এবং গুণগতমানের কারণে ক্রয়াদেশ চলমান থাকবে বলে আমরা আশাবাদী।’

তবে কেবল শুল্ক হ্রাসে ভরসা রেখে থেমে থাকলে হবে না বলেও সতর্ক করছেন অর্থনীতিবিদরা। তাঁদের মতে, এই সুযোগকে স্থায়ী করতে হলে কূটনৈতিক অর্থনীতিকে আরও সুসংহত করতে হবে। সেই সঙ্গে রপ্তানি বহুমুখীকরণ, উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি।

অর্থনীতিবিদ ড. শাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী বলেন, ‘বাংলাদেশ যে কূটনৈতিক সফলতা অর্জন করেছে, সেটি ধরে রাখতে হবে। নিয়মিত ও সুপরিকল্পিত কূটনৈতিক যোগাযোগ বজায় রাখলে এই সাফল্য আরও গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী হবে।’

বিশেষজ্ঞরা আরও মনে করছেন, দেশের বন্দরগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা এবং সরবরাহ ব্যবস্থাপনাও উন্নত করতে হবে, যাতে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ নিজেদের জায়গা ধরে রাখতে পারে এবং নতুন বাজারেও প্রবেশ করতে সক্ষম হয়।