Home আইন-আদালত কারো বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক চার্জ হলে নির্বাচনে ‘প্রার্থী’ হতে পারবেন না

কারো বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক চার্জ হলে নির্বাচনে ‘প্রার্থী’ হতে পারবেন না

 ট্রাইব্যুনাল থেকে প্রজ্ঞাপন

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩-এ সংযোজন করে আইন মন্ত্রণালয় সোমবার রাতে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, যার ফলশ্রুতিতে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কেউ ওপর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল হলেই তিনি আর কোনো জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না এবং সরকারি কোনো পদে নিয়োগও পাবে না।

মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলে অভিযুক্ত ব্যক্তি নিম্নলিখিত অবস্থানগুলোতে থাকার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন—

  • জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বা থাকার যোগ্যতা পাবেন না;
  • স্থানীয় সরকার সংস্থার সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসেবে নির্বাচিত বা নিয়োগপ্রাপ্ত হতে বা থাকতে পারবেন না;
  • প্রজাতন্ত্রের কোনো চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত বা অন্য কোনো সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না।
  • প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, উপধারা (১)-এ যা কিছুই থাকুক না কেন, যদি ট্রাইব্যুনাল কোনো ব্যক্তি অব্যাহতি বা খালাসপ্রাপ্ত করেন, তাহলে ওই ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হবে না।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আইনটিতে আরেকটি সংশোধনও আনা হয়েছে — ট্রাইব্যুনালে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ দাখিল করা হলে তিনি দেশের কোনো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্য হবেন না; অর্থাৎ তিনি জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের সম্পর্কিত অভিযোগের তদন্তে এখন দলের হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং তারা দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করবেন; তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে আওয়ামী লীগের ব্যাপারেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আদালতে কিছু মামলার সাক্ষীরা দলীয় সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করেছে এবং সেই বিবৃতি জুডিশিয়াল ডকুমেন্ট হিসেবে রেকর্ড হয়ে গেছে—ভবিষ্যৎ তদন্তে সেই সাক্ষ্য-প্রমাণগুলো এভিডেন্স হিসেবে গন্য হবে।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, “এই মুহূর্তে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের ব্যাপারেই তদন্ত শুরু হয়েছে; ক্রমান্বয়ে তদন্ত আগালে যদি প্রয়োজন মনে হয় যে অন্য কেও এর সঙ্গে যুক্ত, তাদের সম্পর্কেও তদন্ত করা হবে।”

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক অপরাধ (সংশোধিত), ১৯৭৩-এর ২০(খ) ধারায় সংগঠনের শাস্তি বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সংশোধনীতে ট্রাইব্যুনালকে কোনো দল বা সংস্থা যদি গণহত্যা বা মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ী প্রমাণিত হয় তবে সেই দল-সংগঠন নিষিদ্ধ করার, তাদের নিবন্ধন বাতিল করার ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে—এগুলোকে বিদ্যমান অন্য আইনগুলোর ওপর প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।