Home অন্যান্য প্রেমের পরিণতি শবদেহে, প্রতিদিন কফিন খুলে দেখা করতেন প্রাক্তন প্রেমিকা

প্রেমের পরিণতি শবদেহে, প্রতিদিন কফিন খুলে দেখা করতেন প্রাক্তন প্রেমিকা

আমিরুল মোমেনিন

ভালোবাসা কখনও শেষ হয় না—এই কথাটি অনেকেই রূপক অর্থে বলেন। কিন্তু বাস্তবে এক তরুণীর কাহিনি প্রমাণ করেছে, কিছু ভালোবাসা সত্যিই মৃত্যুর গণ্ডিও অতিক্রম করে যায়। সেই প্রেম এতটাই গভীর ছিল যে প্রিয়জনের মৃত্যুর পরও থামেনি। প্রতিদিন কবরস্থানে গিয়ে কফিন খুলে মৃত প্রেমিকের মুখে স্পর্শ করে ফিরতেন তিনি।

ঘটনাটি দক্ষিণ আমেরিকার এক শহরে ঘটেছিল, যা এক সময় স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর বিস্ময়ের ঝড় তোলে। পরে আন্তর্জাতিক মিডিয়াও এ নিয়ে প্রতিবেদন করে।

ভালোবাসার শুরু, আর শেষের পরও না ফুরানো প্রতীক্ষা

তাদের মধ্যে প্রেম শুরু হয়েছিল কলেজ জীবন থেকে। একসঙ্গে ক্লাস, আড্ডা, পার্কে সময় কাটানো, ভবিষ্যতের স্বপ্ন—সবই ছিল ছবির মতো সুন্দর। ছেলেটি ছিল দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারের সন্তান, কিন্তু মেধাবী ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী। মেয়েটির পরিবার ছিল কিছুটা রক্ষণশীল, কিন্তু তার ভালোবাসায় ছিল দৃঢ়তা।

তবে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় তরুণটি অকালে প্রাণ হারায়। এই মৃত্যু ছিল শুধু একটি প্রাণের ক্ষতি নয়, ছিল একটি স্বপ্নভঙ্গ, একটি জীবনের ছন্দপতন। প্রেমিকের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর থেকেই তরুণী ভেঙে পড়েন মানসিকভাবে। হাসপাতালে, জানাজায়, এমনকি কবরস্থানে পর্যন্ত ছিলেন নির্বাক, নিঃশব্দ, যেন চোখের পেছনে এক গভীর অন্ধকার জমে ছিল।

প্রতিদিন দেখা, প্রতিদিন বিদায়

কিন্তু এখানেই শেষ নয়। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কয়েকদিন পর একদিন মেয়েটি গোপনে কবরস্থানে গিয়ে কফিন তোলার চেষ্টা করেন। প্রথমে কেউ টের পায়নি। পরে দেখা যায়, তিনি প্রায় প্রতিদিনই কবরস্থানে যান, যেখানে কফিনটি সিমেন্ট দিয়ে সিল করা হয়নি।

তিনি গিয়েই কফিনের ঢাকনা খুলে প্রেমিকের মুখের দিকে চেয়ে থাকতেন। কখনও তার কপালে চুমু খেতেন, কখনও চোখ বন্ধ করে দীর্ঘ সময় বসে থাকতেন। একজন কবরস্থানের পাহারাদার একদিন বিষয়টি দেখে ফেলেন। প্রথমে ভয় পান, কিন্তু পরে মেয়েটির কান্না আর আকুলতায় বুঝতে পারেন, এই প্রেমিকাকে তার ভালোবাসা আজও আটকে রেখেছে এক মৃতদেহের ঘ্রাণে।

সমাজের প্রতিক্রিয়া ও মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ

এ ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর অনেকে একে বলেন “ভক্তি ও পাগলামির মধ্যবর্তী এক রোমহর্ষক ভালবাসার নিদর্শন”। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, এটি একটি রোগগত মানসিক অবস্থার নাম—থানাটোফিলিয়া, যেখানে কেউ মৃত ব্যক্তির প্রতি আকর্ষণ বা প্রেম অনুভব করে।

অনেকে আবার এটিকে দেখেছেন হৃদয়ভাঙা প্রেমের এক নিঃশব্দ বেদনাময় রূপ হিসেবে। তরুণীকে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়, পরে তাকে মানসিক পুনর্বাসনে পাঠানো হয় দীর্ঘমেয়াদি থেরাপির জন্য।

প্রেম কি শেষ হয়ে যায়?

এই ঘটনার শেষে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, যদি ভালোবাসা জীবনের অংশ হয়, তবে মৃত্যু কি তা থামিয়ে দিতে পারে? নাকি কিছু প্রেম এমনই—যেখানে স্পর্শ না থাকলেও অনুভব থাকে, শব্দ না থাকলেও দীর্ঘশ্বাস রয়ে যায়।

আপনার মতামত জানান

এই ভালোবাসা কি আবেগের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ, নাকি এক ভয়ংকর মানসিক বিপর্যয়? আপনার ভাবনা লিখুন নিচে কমেন্টে। ভালো লাগলে প্রতিবেদনটি লাইক দিন ও বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। অনুভবের গভীরতা বুঝতে হয় হৃদয় দিয়ে, চোখ দিয়ে নয়।