নয়ন দাস, কুড়িগ্রাম: নাগেশ্বরী উপজেলায় ব্যক্তিগত বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই বন্ধুর মধ্যে ঘটে গেল মাদকসহ একটি চক্রান্তের ঘটনা। এক বন্ধুকে ফাঁসাতে ইয়াবা কিনে মোটরসাইকেলের সিটের নিচে রেখে পুলিশকে জানান দেয় অপর বন্ধু। শেষ পর্যন্ত পুলিশের ধাপে ধাপে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের পর ধরা পড়ে তারা।
নাগেশ্বরী থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, ঘটনাটি সোর্সের মাধ্যমে নজরে আসে। শুক্রবারের ঘটনা সন্দেহজনক মনে হওয়ায় পরিকল্পনা করে তদন্ত চালানো হয়। সোমবার বিকেলে দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন ফুলবাড়ীর কাশিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ অনন্তপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে জুয়েল হক ও নাগেশ্বরীর এগারো মাথা সাতকুড়ারপাড় এলাকার আছকের আলীর ছেলে মনির হোসেন। মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন জুয়েল হক, আর মনির ছিলেন তার সহযোগী।
পুলিশ জানিয়েছে, ভুক্তভোগী মিলন মিয়া ফুলবাড়ীর ঠাটারীটারি গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেনের ছেলে। প্রেমের বিষয় এক বন্ধুর কাছে ফাঁস হওয়ায় মিলনের পরিবারে অশান্তি শুরু হয়। এ কারণে মনির ও জুয়েল মিলে পরিকল্পনা করেন মিলনকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর।
এসআই অপূর্ব কুমার জানান, শনিবার রাতে মনির ফোন করে জানান, নেওয়াশী ইউনিয়নের এগারো মাথা বাজারে একটি মোটরসাইকেলের সিটের নিচে ইয়াবা আছে। পুলিশ গিয়ে মোটরসাইকেল আটক করে ৬৭টি ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। জিজ্ঞাসাবাদে মিলন মিয়া এ বিষয়ে অজ্ঞতা প্রকাশ করলে সন্দেহ হয়।
পরবর্তীতে মনিরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানান, জুয়েলের নির্দেশেই পুলিশকে খবর দিয়েছেন তিনি। এরপর জুয়েলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জুয়েল স্বীকার করেন, মনিরের সঙ্গে মিলিয়ে তারা ১০ হাজার টাকায় ইয়াবা কিনে মিলনের মোটরসাইকেলের সিটের নিচে রেখে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন।
এসআই প্রভাত চন্দ্র রায় বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন।
নাগেশ্বরী থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত বিবাদ থেকে এমন অপকর্ম, যা বন্ধুত্বের নামেও অমানবিক। আমরা আইনের হাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছি।’’
এ ঘটনা বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে দ্বন্দ্ব কখনো জীবনের পথ বিপথগামী করতে পারে—এর একটি দৃষ্টান্ত হয়ে রইল নাগেশ্বরী থানার এই মাদক মামলা।