Home আকাশ পথ জাপানে জঙ্গি বিমান বিধ্বস্ত, পাইলট সুস্থ

জাপানে জঙ্গি বিমান বিধ্বস্ত, পাইলট সুস্থ

এভিয়েশন ডেস্ক: জাপানের পূর্বাঞ্চলীয় ইবারাকি উপকূলে প্রশিক্ষণ চলাকালে একটি এয়ার সেল্ফ-ডিফেন্স ফোর্সের যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। ফাইটার জেটটি ছিল এফ-টু মডেলের একক আসনের বিমান, যা হিয়াকুরি ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করেছিল। ঘটনার সময় বিমানে কেবল একজন পাইলট ছিলেন, যিনি নিরাপদে ইজেক্ট করতে সক্ষম হন এবং পরে উদ্ধারকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি প্রাণহানির ঝুঁকিতে নেই বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচার সংস্থা।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে প্রশিক্ষণ চলাকালে বিমানটি সমুদ্রের ওপর বিধ্বস্ত হয়। তবে দুর্ঘটনাস্থলে কোনো নৌযান বা সামুদ্রিক সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। জাপান এয়ার সেল্ফ-ডিফেন্স ফোর্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার বিস্তারিত কারণ জানতে তদন্ত চলছে এবং এখনো বিভিন্ন দিক যাচাই করা হচ্ছে।

প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিমানটি আকাশে ছিল বলে জানা গেছে। জাপানে যুদ্ধবিমানের নিয়মিত প্রশিক্ষণ ফ্লাইট পরিচালিত হয়, যার মাধ্যমে পাইলটদের সক্ষমতা যাচাই ও উন্নয়ন নিশ্চিত করা হয়। এই ঘটনার ফলে সাময়িকভাবে ইবারাকি উপকূলীয় অঞ্চলে বিমান চলাচলে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।

ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতায় দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিরক্ষা বাহিনী সাড়া দেয়। সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা পাইলটকে হেলিকপ্টারে করে সরাসরি চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, পাইলটের শরীরে গুরুতর কোনো জখম পাওয়া যায়নি এবং তিনি দ্রুত সেরে উঠবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এ ঘটনার কয়েক মাস আগে, চলতি বছরের মে মাসে আরেকটি সামরিক প্রশিক্ষণ বিমান টি-ফোর মডেল আছড়ে পড়ে দেশটির আইচি অঞ্চলের একটি জলাধারে। সেই দুর্ঘটনায় দুইজন ক্রু নিহত হন। ফলে এই ধরনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে।

জাপানে সামরিক বিমান দুর্ঘটনা খুব ঘনঘন ঘটে না। তবে চলমান বৈশ্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে এ ধরনের অনুশীলন আরও বেশি নিয়মিত এবং ব্যাপকভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এর ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও তুলনামূলকভাবে বেড়েছে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমান পরিচালনায় ব্যবহৃত প্রযুক্তি এবং নিরাপত্তা মানদণ্ডে আরও আধুনিকায়ন প্রয়োজন।

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঘাঁটির সব ধরনের প্রশিক্ষণ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হবে। পাশাপাশি বিমানের কারিগরি ত্রুটি, আবহাওয়া এবং পাইলটের সিদ্ধান্ত—সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এই দুর্ঘটনা জাপানের সামরিক প্রস্তুতি এবং প্রশিক্ষণ পদ্ধতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। তবে কর্তৃপক্ষের দ্রুত সাড়া এবং সফল উদ্ধার অভিযান জনগণের মধ্যে আস্থার বার্তা দিয়েছে।