Home সারাদেশ বকশিশ না পেয়ে অক্সিজেন খুলে নিল ক্লিনার, রোগীর মৃত্যু

বকশিশ না পেয়ে অক্সিজেন খুলে নিল ক্লিনার, রোগীর মৃত্যু

ছবি এ আই
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, খুলনা: খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে অক্সিজেন নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, বকশিশ না পেয়ে এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই শেখ সাইফুল ইসলাম (৩৮) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়। গতকাল রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এতে হাসপাতালজুড়ে ক্ষোভ ও ক্ষরণ দেখা দিয়েছে।

মৃত সাইফুল খুলনার খান জাহান আলী থানার যোগিপোল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত শেখ ইসমাইলের ছেলে। পরিবারের সদস্যরা জানান, কিডনি জটিলতা নিয়ে শনিবার সকালে তাকে মেডিসিন ইউনিট-১-এর ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ওই রাতেই অবস্থার অবনতি হলে অক্সিজেনের জন্য মরিয়া চেষ্টা করেন তারা। ডাক্তার ও নার্সদের কাছে গিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর এক ওয়ার্ডবয়কে টাকা দিয়ে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু পরদিন সকালে পরিচ্ছন্নতাকর্মী জব্বার অক্সিজেন সিলিন্ডার খুলে নিয়ে যায়। স্বজনদের বাধা সত্ত্বেও তিনি দুর্ব্যবহার করেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সাইফুল মারা যান।

সাইফুলের বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম বলেন, “রাতে অক্সিজেন জোগাড় করার পর ভাই কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিল। কিন্তু সকালে হঠাৎ জব্বার এসে অক্সিজেন খুলে অন্য রোগীর কাছে নিয়ে যায়। আমরা বাধা দিলেও সে শোনেনি।”

এ অভিযোগ অস্বীকার করে পরিচ্ছন্নতাকর্মী জব্বার দাবি করেন, তিনি একজন মুমূর্ষু রোগীর জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়েছিলেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া রোগীর অক্সিজেন খুলে নেওয়া তার দায়িত্ব কি না—সে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি তিনি।

খুমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, “হাসপাতালে অক্সিজেনের কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণ সিলিন্ডার রয়েছে। কোনো রোগীর অক্সিজেন খোলা বা দেওয়া ডাক্তারদের সিদ্ধান্তে হবে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীর এ ধরনের ভূমিকা রাখার সুযোগ নেই। যদি সত্যিই এমন ঘটনা ঘটে থাকে তবে এটি গুরুতর অপরাধ। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আক্তারুজ্জামানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, জরুরি চিকিৎসাসেবার কাজে ব্যস্ত আছেন।

অক্সিজেন সরবরাহ নিয়ে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় রোগীর স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। স্থানীয়রা বলছেন, হাসপাতালের ভেতরে অনিয়ম ও বকশিশ নির্ভর সেবা যদি বন্ধ না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ আরও বিপদে পড়বে।