বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ: পাকুন্দিয়ায় বজ্রপাতে স্কুল থেকে ফেরা হলো না তিন কিশোরীর। উপজেলার চরটেকী গ্রামে মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজনই নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
নিহতরা হলেন—চরটেকী গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে ইরিনা (১৫), বাদল মিয়ার মেয়ে প্রিয়া (১৫) এবং বোরহান উদ্দিনের মেয়ে বর্ষা (১৫)। তারা স্থানীয় চরটেকী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতেন।
স্থানীয়রা জানান, দুপুরে স্কুল শেষে বাড়ি ফিরছিল তিন কিশোরী। এ সময় হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হয়। বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছানোর আগেই হঠাৎ বজ্রপাত হলে তিনজনই গুরুতর আহত হন। আশপাশের লোকজন দ্রুত তাদের উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ইরিনা ও প্রিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। কিছু সময় পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বর্ষারও মৃত্যু হয়।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাখাওয়াৎ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বজ্রপাতে প্রাণহানির ঘটনা গ্রামীণ অঞ্চলে দিন দিন বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠ ও উঁচু গাছের নিচে আশ্রয় না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
বাংলাদেশে প্রতি বছই বজ্রপাতে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খুব সহজ কিছু সতর্কতা মেনে চললেই এই বিপদের ঝুঁকি অনেকটা কমানো সম্ভব। বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠ, ধানক্ষেত কিংবা খালি জায়গা এড়িয়ে চলা জরুরি। আশ্রয়ের জন্য গাছের নিচে নয়, বরং পাকা ভবনের ভেতর নিরাপদ জায়গায় অবস্থান করাই শ্রেয়। এ সময় ধাতব বস্তু যেমন ছাতা, সাইকেল কিংবা মোবাইল ফোন ব্যবহার না করাই ভালো।
টিনশেড ঘরে অবস্থান করলে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা উচিত। বজ্রপাত শুরু হলে দুই পা একসঙ্গে করে শুকনো কিছু নিচে রেখে বসে থাকলে নিরাপদ থাকা যায়। অন্যদিকে, এ সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা, চার্জ দেওয়া, ধাতব ছাতা ব্যবহার, জলাশয়ে থাকা বা গোসল করা এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি চালু রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বজ্রপাত সংক্রান্ত সতর্কবার্তা দেওয়ার জন্য মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে, যা সবার জন্যই ব্যবহারযোগ্য। ‘সতর্ক থাকুন, নিরাপদ থাকুন’—এই নীতিতে চললে অনেক জীবন বাঁচানো সম্ভব।