সুন্দরবনের গহীনে, যেখানে গাছপালা আর জল একে অপরকে আলিঙ্গন করে, সেখানে বাস করেন এক অলৌকিক-বনবিবি। তিনি কেবল বন রক্ষা করেন না, মানুষ ও পশুর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষায় অদ্ভুত এক মাতৃত্ববোধ ও সাহসিকতার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
এক সময় সুন্দরবন ছিল হিংস্র বাঘ, দস্যু ও ভুতুড়ে আতঙ্কে পরিপূর্ণ। জেলে, মৌয়াল কিংবা কাঠুরে যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গলে প্রবেশ করত, তারা বনবিবির নাম নিয়ে শুরু করত কাজ। বিশ্বাস করা হতো, বনবিবি তাদের রক্ষা করবেন।
বনবিবির কাহিনির মূল চরিত্র আসে দুঃখ-ভরা এক ইতিহাস থেকে। তিনি ছিলেন আরবদেশের এক মহৎ নারী, যার জন্ম অলৌকিকভাবে। ভাগ্য তাঁকে এনে ফেলে সুন্দরবনের নরম-কঠিন প্রকৃতির মাঝে। সেখানেই তিনি দুঃখী, বিপন্ন ও নিপীড়িত মানুষদের পাশে দাঁড়ান।
রূপকথায় বলা হয়, বনবিবি ও দাক্ষিণ রায়ের মধ্যে এক সময় সংঘর্ষ বাঁধে। দাক্ষিণ রায় ছিলেন পশুদের রক্ষক, বিশেষ করে বাঘের। এক সময় এক ছোট ছেলের জীবন নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়। বনবিবি তখন সেই শিশুকে রক্ষা করেন, আর দাক্ষিণ রায়কে শেখান সহমর্মিতা ও মানবতা।
এই কাহিনি কেবল অলৌকিকতা নয়, এতে আছে সমাজে ধর্মীয় সম্প্রীতির ইঙ্গিতও। বনবিবি মুসলিম, আর তাঁর সঙ্গে যারা থাকেন, তাদের কেউ হিন্দু, কেউ আবার স্থানীয় বন-আদিবাসী। এই কাহিনি ধর্ম ও সংস্কৃতির সীমানা পেরিয়ে মানুষের জীবনের সঙ্গে মিশে আছে।
সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আজও বনবিবির পালা গান হয়, মেলা বসে, আর মৌয়ালরা ‘বনবিবি জিন্দাবাদ’ বলে জঙ্গলে পা রাখে।
👉 যদি বনবিবির এই রূপকথা আপনাকে ছুঁয়ে যায়, তাহলে ❤️ লাইক করুন, 🔁 শেয়ার করুন এবং ✍️ মতামত দিন!
আপনার একটি ক্লিকেই ছড়িয়ে পড়ুক আমাদের লোকজ ঐতিহ্য 💫
#বনবিবি #সুন্দরবন #লোককাহিনি #বাংলাররূপকথা #শেয়ারকরুন #