বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: ভারতের গুজরাট রাজ্যে চালানো এক চিরুনি অভিযানে এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করার দাবি করেছে পুলিশ। আহমেদাবাদ ও সুরাটে একযোগে অভিযান চালিয়ে নারী-শিশুসহ এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের কারও কাছেই বৈধ কোনো নথিপত্র ছিল না বলে জানিয়েছে গুজরাট পুলিশ।
গুজরাটের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হর্ষ সাংঘভি শনিবার জানান, শুধু আহমেদাবাদ শহরেই প্রায় ৮৯০ জন এবং সুরাটে আরও ১৩৪ জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। তিনি একে গুজরাট পুলিশের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বড় অভিযান’ বলে উল্লেখ করেছেন।
পুলিশের দাবি, আটক ব্যক্তিদের অনেকেই জাল নথি সংগ্রহ করে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। গুজরাটে এসে তাঁরা নানা ধরনের শ্রম ও কাজের সঙ্গে যুক্ত হন। তবে পুলিশ আরও জানিয়েছে, আটককৃতদের মধ্যে কিছু লোক মাদক পাচার এবং মানব পাচারের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।
হর্ষ সাংঘভি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা এখনো আত্মগোপনে রয়েছে, তাদের দ্রুত আত্মসমর্পণ করতে হবে। অন্যথায় কড়া আইনি পদক্ষেপের মুখে পড়তে হবে এবং আটক হওয়ার পর তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অনুপ্রবেশকারীদের ধরতে গত শুক্রবার ভোররাত থেকেই অভিযান শুরু হয়। আহমেদাবাদের চান্দোলা এলাকা থেকে একসঙ্গে ৪০০ জনকে আটক করা হয়। স্থানীয় সূত্রের সহযোগিতায় চিহ্নিত করা হয় আরও অনেককে। একইসঙ্গে সুরাটেও শুক্রবার রাত থেকে অভিযান চালানো হয় এবং তা শনিবার পর্যন্ত চলতে থাকে।
এদিকে, মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, জীবিকার সন্ধানে মানুষজন যখন সীমান্ত পেরিয়ে অনিশ্চিত জীবনের ঝুঁকি নেয়, তখন কেবল আইনের কড়াকড়ি নয়, প্রয়োজন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিও। অনুপ্রবেশ অবশ্যই অপরাধ, তবে দারিদ্র্য-পীড়িত মানুষের জীবন সংগ্রামকেও অগ্রাহ্য করা ঠিক নয় বলে মত দিয়েছেন তাঁরা।
গুজরাটের পাশাপাশি দিল্লিতেও সম্প্রতি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের আটক করার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের দাবি, আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্র ভেঙে দিতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের এপ্রিলেই অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত দুইটি এফআইআর দায়ের হয় এবং ১২৭ জন অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে ৭৭ জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
গুজরাট পুলিশ জানিয়েছে, এবারও আটককৃতদের আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দ্রুত তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।