Home Third Lead ব্যয় বেড়েছে, টিকিট কমেছে: সংকটে এশিয়ার সাশ্রয়ী বিমান সংস্থা

ব্যয় বেড়েছে, টিকিট কমেছে: সংকটে এশিয়ার সাশ্রয়ী বিমান সংস্থা

এভিয়েশন ডেস্ক: এশিয়ার সবচেয়ে বড় বাজেট এয়ারলাইন্সগুলো এখন হুমড়ি খেয়ে প্রতিযোগিতায় । এরফলে, লাভের মার্জিন দিন দিন কমে যাচ্ছে। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার কান্তাস এয়ারওয়েজ তাদের সিঙ্গাপুর-ভিত্তিক লোকসানী সাবসিডিয়ারি জেটস্টার এশিয়া বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।  তা গোটা অঞ্চলে বাজেট এয়ারলাইন্স ব্যবসার চ্যালেঞ্জকে সামনে নিয়ে এসেছে।

গত দুই দশকে এশিয়ায় কম খরচে ভ্রমণের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। চীনা পর্যটকদের বাড়তে থাকা চাহিদা ও বাড়তি আয় সেই প্রবণতাকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। তবে বিপুল যাত্রীর সংখ্যা থাকা সত্ত্বেও লাভের মার্জিন পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় অনেকটাই কম। আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থা (আইএটিএ) পূর্বাভাস দিয়েছে, এ বছর এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের এয়ারলাইন্সগুলোর গড় লাভের হার হবে মাত্র ১ দশমিক ৯ শতাংশ, যেখানে বিশ্ব গড় ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহামারি পরবর্তী সময়ে প্রায় সব বিমান সংস্থা তাদের পূর্ণ ধারণক্ষমতা ফেরত এনেছে। ফলে বাজেট যাত্রীদের মধ্যে দাম-নির্ভর প্রতিযোগিতা বেড়ে গিয়েছে এবং টিকিটের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক ভাড়ার গড় ১২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

এদিকে, জ্বালানি ও বিমানবন্দরের চার্জ, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এবং নিরাপত্তা ব্যয় দ্বিগুণ হারে বাড়ছে। এছাড়া নতুন উড়োজাহাজের সংকটের কারণে লিজ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ও ঊর্ধ্বমুখী।

এই বাস্তবতায় জেটস্টার এশিয়া জানিয়েছে, তারা সিঙ্গাপুরে “অত্যন্ত উচ্চ ব্যয়বৃদ্ধি”র মুখে পড়েছে এবং তা তাদের টিকে থাকার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। কান্তাস গ্রুপ এখন তাদের বিমানগুলোকে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে সরিয়ে নিচ্ছে, যেখানে ব্যয় অনেকটা নিয়ন্ত্রণে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন বাজেট এয়ারলাইন্সগুলোর জন্য “বড় বিনিয়োগ করো, না হয় ব্যবসা গুটাও” এমন এক কঠিন বাস্তবতা তৈরি হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য যে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই এখন বাজেট ক্যারিয়ারে পরিচালিত হয়। যা তুলনায় বৈশ্বিক গড় মাত্র এক-তৃতীয়াংশ।

এয়ারএশিয়া, ভিয়েতনামের ভিয়েতজেট, ফিলিপাইনের সেবু প্যাসিফিক এবং সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের স্কুট—এই চারটি বড় বাজেট সংস্থা একযোগে আরও বিমান সংযোজন করছে। ভিয়েতজেট সম্প্রতি প্যারিস এয়ারশোতে ১৫০টি একক-অ্যাসেল বিমানের অর্ডার দিয়েছে এবং আগেই তারা ২০০টি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ও ২০টি এ৩৩০নিও চুক্তিতে ছিল।

অন্যদিকে এয়ারএশিয়া প্রধান নির্বাহী টনি ফার্নান্দেস জানিয়েছেন, তারা ৫০ থেকে ৭০টি  একক-অ্যাসেল এবং ১০০টি আঞ্চলিক জেট কেনার পরিকল্পনায় রয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক এয়ারলাইন্স সংস্থার মহাপরিচালক সুবাস মেনন বলেছেন, “এখন সময় ‘বড় হও নতুবা বাড়ি যাও’ সিদ্ধান্ত নেওয়ার।”