তিনি বলেন, “তখন আমাদের দাদারা মোটর গাড়ি নিয়ে আসতেন, আমরা তো ভাবতাম এ বুঝি রূপকথার কিছু। আর এখন শুনি ‘নজু মিয়া হাট শহর হয়ে গেছে, শহর বিলাত হয়ে গেছে’। ভাবতেই অবাক লাগে।”
গ্রামবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আজকের এই অবস্থানে আসতে পেরেছি আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে এসেছিলাম, ভাবলাম এই সুযোগে বাড়িতে একটু দেখে যাই। আপনাদের সঙ্গে দেখা হলো, মন ভরে গেল। ইনশাআল্লাহ আবার আসব।”
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: দিনভর চট্টগ্রামে কর্মব্যস্ততা শেষে একটুখানি শৈশব খুঁজে নিতে নিজ গ্রাম বাথুয়ায় ফিরেছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দীর্ঘদিন পর গ্রামে ফিরে তিনি যেন ফিরে যান সেই চিরচেনা শৈশবে। যেখানে মাঠের ধারে ছুটে বেড়ানো, আঞ্চলিক ছড়া বলার ছন্দ, আর প্রিয়জনদের সঙ্গে কাটানো সোনালি দিন।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে অংশ নিয়ে সরাসরি হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের নিজ গ্রাম বাথুয়ায় যান ড. ইউনূস। গ্রামের মানুষ তাকে ঘিরে আবেগে ভাসেন। এক সময় যাদের সঙ্গে তিনি খেলেছেন, কথা বলেছেন, সেইসব পাড়ার মুখগুলোর অনেকেই ছুটে আসেন তাকে একনজর দেখার জন্য।
গ্রামে পা দিয়েই তিনি চলে যান তার দাদা-দাদির কবর জিয়ারতে। এরপর একটি খোলা মাঠে দাঁড়িয়ে গ্রামের মানুষের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে গিয়ে তিনি নিজেই হারিয়ে যান শৈশবের খণ্ডচিত্রে। হেসে হেসে স্মরণ করেন ছোটবেলায় বলা ছড়ার টুকরো: “আব্দুর রশীদ ঠেণ্ডলের ঠাট, নজু মিয়া হাট, দুলা মিয়ার দাদার বাড়ি, শোলক মিয়ার মোটর গাড়ি।”
তিনি বলেন, “তখন আমাদের দাদারা মোটর গাড়ি নিয়ে আসতেন, আমরা তো ভাবতাম এ বুঝি রূপকথার কিছু। আর এখন শুনি ‘নজু মিয়া হাট শহর হয়ে গেছে, শহর বিলাত হয়ে গেছে’। ভাবতেই অবাক লাগে।”
গ্রামবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আজকের এই অবস্থানে আসতে পেরেছি আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে এসেছিলাম, ভাবলাম এই সুযোগে বাড়িতে একটু দেখে যাই। আপনাদের সঙ্গে দেখা হলো, মন ভরে গেল। ইনশাআল্লাহ আবার আসব।”
এর আগে তিনি হাটহাজারীর ঐতিহাসিক জোবরা গ্রামে যান, যেখানে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রথম শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই জোবরা গ্রামে গড়ে তোলা হয়েছে ‘জোবরা জাদুঘর’, যা এখন তার কর্মজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্মারক।
দিন শেষে ঢাকার পথে রওনা দেন ইউনূস। কিন্তু বাথুয়া গ্রামে রেখে যান শত শত মানুষের হৃদয়ে এক টুকরো ভালোবাসার আবেগ আর স্মৃতির স্পর্শ।