Home আইন-আদালত শনিবার মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’-এর শিলান্যাস

শনিবার মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’-এর শিলান্যাস

হাইকোর্টে স্বস্তিতে হুমায়ুন কবীর: মোতায়েন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী

কৃষ্ণা বসু, কলকাতা:  কলকাতা হাইকোর্টে বড়সড় স্বস্তি পেলেন ভরতপুরের সদ্য সাসপেন্ড হওয়া বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গায় ‘বাবরি মসজিদ’-এর শিলান্যাস কর্মসূচি আটকানো নিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় হস্তক্ষেপ করল না উচ্চ আদালত। ফলে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৬ ডিসেম্বর, অর্থাৎ বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনেই এই শিলান্যাস কর্মসূচি পালনে আর কোনও আইনি বাধা রইল না।

আদালতের পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশ
শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এই ধরনের অনুষ্ঠানের ফলে এলাকায় শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে। তবে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, “শিলান্যাসের কর্মসূচিতে আপাতত কোনও বাধা নেই। আদালত এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।”

তবে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালত নির্দেশ দিয়েছে:
১. এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যাতে কোনোভাবেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়, তা পুলিশকেই নিশ্চিত করতে হবে।
২. মুর্শিদাবাদ এলাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে ১৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখতে হবে। প্রয়োজনে জেলায় আগে থেকেই উপস্থিত কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করতে পারবে রাজ্য সরকার।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও হুমায়ুনের হুঙ্কার
আগামী ৬ ডিসেম্বর বেলডাঙ্গায় বাবরি মসজিদের আদলে একটি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ডাক দিয়েছিলেন হুমায়ুন কবীর। এই কর্মসূচির জেরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে—এই আশঙ্কায় রাজ্যপাল রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে হুমায়ুনকে আগাম গ্রেপ্তারের পরামর্শ দিয়েছিলেন। এরপরই নাটকীয়ভাবে গতকাল তাঁকে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে আজীবনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়।

দলীয় সিদ্ধান্তের পর ক্ষোভ প্রকাশ করে হুমায়ুন কবীর মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল ত্যাগ করেন এবং চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন যে, শিলান্যাস তিনি করবেনই। তিনি আরও ঘোষণা করেন যে, আগামী ২২ ডিসেম্বর তিনি নতুন দল গঠন করবেন। হাইকোর্টের এই রায়ের পর শনিবারের কর্মসূচিতে তাঁর আর কোনও বাধা রইল না, যা রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ ছড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।