বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, যশোর: যশোরের শার্শা উপজেলার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর গ্রামে লিটন (৩০) নামে এক বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা রাজনৈতিক উত্তেজনা ও এলাকাবাসীর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নিহত লিটন বিএনপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং সম্প্রতি তিনি দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমেও যুক্ত ছিলেন।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত ১০টার দিকে শার্শা উপজেলার লক্ষ্মণপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে। নিহত লিটনের বাড়ি ওই গ্রামের আজগার আলীর বাড়িতে।
নাভারন সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান জানান, ঘটনার সময় লিটন বাজারে বসে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে একই এলাকার সেলিম ও রমজান নামে দুই ব্যক্তি তার ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হন তিনি। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশের ধারণা, পূর্ব শত্রুতার জেরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। তবে স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, লিটনের রাজনৈতিক পরিচিতি ও দলীয় কার্যক্রমের কারণেও তিনি বিভিন্ন সময় হুমকির মুখে ছিলেন।
শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে এম রবিউল ইসলাম বলেন, “আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। অভিযুক্তদের আটকের জন্য পুলিশের একাধিক দল অভিযান চালাচ্ছে। যেকোনো মূল্যে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।”
নিহতের পরিবার জানিয়েছে, লিটনের সঙ্গে সেলিম ও রমজানের পুরনো বিরোধ ছিল, যা সম্প্রতি আরও তীব্র হয়। কয়েকদিন আগেও তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয় বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। পরিবারের দাবি, পূর্বপরিকল্পিতভাবে লিটনকে হত্যা করা হয়েছে।
এই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা লিটনের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এবং হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এলাকায় বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বিএনপির যশোর জেলা সভাপতি বলেন, “সরকারদলীয় লোকজন আমাদের কর্মীদের টার্গেট করছে। লিটন রাজনৈতিকভাবে সচেতন ও সাহসী ছিল, এটাই তার অপরাধ।”
এ ঘটনার পর দুর্গাপুর গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন সজাগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকারী পুলিশ সুপার।