বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, টেকনাফ ( কক্সবাজার ): কক্সবাজারের টেকনাফে জেলা বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিরোধ রক্তক্ষয়ী রূপ নিয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে পৌরসভার শাপলা চত্বরে দলটির দুই গ্রুপের মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
বিকেল চারটার দিকে সাবরাং থেকে জেলা সভাপতি ও সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরীপন্থী নেতাকর্মীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পৌর শহরে পৌঁছালে জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহর অনুসারীরা পাল্টা অবস্থান নেন। মুখোমুখি অবস্থানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং মুহূর্তেই তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সদস্য রাশেদুল করিম মার্কিন, টেকনাফ উপজেলা ক্রীড়া সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম, সাবরাং ছাত্রদলের সচিব কামরুল হুদা, বিএনপি নেতা এজাহার মিয়া, যুবদল নেতা সব্বির আহমদ, ইউনিয়ন বিএনপির নেতা কবির আহমদ, সাবেক সভাপতি মৌলভী আবদুল গফুর, এবং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ফরিদ আলম।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের বরাতে জানা গেছে, সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে জেলা বিএনপির নেতাদের নিয়ে দুটি পৃথক ভিডিও প্রতিবেদন ভাইরাল হয়। একটিতে সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্য ও দলীয় দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়, অপরটিতে আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে জমি দখল ও সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিনের পুরনো কোন্দল আরও চরমে পৌঁছায়।
শাহজাহানপন্থী টেকনাফ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন জানান, ‘আমাদের বিক্ষোভ ছিল পূর্বনির্ধারিত। আমরা সংঘাত এড়াতে মিছিলের রুট পরিবর্তন করি। এরপরও সাবরাং মিছিলে অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে।’
টেকনাফ উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান সিদ্দিকী বলেন, ‘আবদুল্লাহর নেতৃত্বে জিয়াউর রহমান, আব্দুর রহমান, মনির উল্লাহ, জয়নাল, বিপ্লবসহ শতাধিক লোক হামলায় অংশ নেয়। আহতদের মধ্যে ছয়জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
ঘটনার বিষয়ে মোহাম্মদ আবদুল্লাহর বক্তব্য নিতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
টেকনাফ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিমেল রায় জানান, ‘ঘটনার বিষয়ে থানায় কেউ এখনো অভিযোগ দেয়নি। তবে আমরা খতিয়ে দেখছি।’
বিএনপির এই দ্বন্দ্বপূর্ণ পরিস্থিতি কক্সবাজার জেলা রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, দীর্ঘদিনের গ্রুপিং এখন প্রকাশ্য সংঘাতে রূপ নিয়েছে, যা ভবিষ্যতে আরও বড় সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে দলটিকে।