বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, রাজশাহী: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজশাহীর রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে দলীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে আলোচনা শুরু হয়েছে জোরেশোরে। এ প্রেক্ষাপটে রাজশাহীর তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন তিন তরুণ ব্যারিস্টার, যারা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়তাবাদী রাজনীতি ও আইন পেশায় সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছেন।
তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে এই তিন ব্যারিস্টারকে নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে নতুন আশার সঞ্চার। তারা হলেন—যুক্তরাজ্য জিয়া পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার রেজাউল করিম (রাজশাহী-৫: পুঠিয়া-দুর্গাপুর), বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন (রাজশাহী-১: গোদাগাড়ী-তানোর), এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য ব্যারিস্টার সালেকুজ্জামান সাগর (রাজশাহী-৪: বাগমারা)।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, বয়সে তরুণ হলেও এই তিন ব্যারিস্টারই রাজনৈতিকভাবে পরিপক্ব ও তৃণমূলভিত্তিক। তারা বিএনপি পরিবারের সন্তান, দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি ও মানবসেবার মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করেছেন।
ব্যারিস্টার রেজাউল করিম পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর এলাকার সন্তান। খুব অল্প সময়েই স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন তিনি। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, বিনামূল্যে চিকিৎসা সহায়তা, ঝরে পড়া শিশুদের কুরআন শিক্ষা, ক্যান্সার আক্রান্ত কর্মীদের চিকিৎসা ব্যয় বহন এবং রাস্তা-ঘাট সংস্কারের মতো উদ্যোগে তিনি ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
তার প্রতিষ্ঠিত ‘ফেরদৌসী ফাউন্ডেশন’ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তা প্রদানে কাজ করছে। মানবিকতার উদাহরণ হিসেবে তিনি দুর্গাপুরের নিহত যুবদল নেতার দুই মেয়ের দায়িত্বও নিয়েছেন।
রেজাউল করিম বলেন, ‘রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপির ভিত্তি শক্তিশালী। জনগণ পরিবর্তন চায়। সুযোগ পেলে আমি উন্নয়ন ও ন্যায্যতার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’
ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন গোদাগাড়ী উপজেলার মহিষালবাড়ি সগরপাড়ার সন্তান। তিনি প্রয়াত বিএনপি নেতা ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ফুপাতো বোনের ছেলে। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং সংগঠনের আইনি ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে ভূমিকা রেখে আসছেন।
মিলন বলেন, ‘রাজনীতি আমার কাছে দায়িত্ব ও অঙ্গীকার। কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় বৈষম্য দূর করে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়তে চাই।’
ব্যারিস্টার সালেকুজ্জামান সাগর বাগমারা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও গণিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান রঞ্জুর পুত্র। তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মরহুম অধ্যাপক মকলেছুর রহমানের ভাতিজা। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
দলীয় নেতাকর্মীদের আইনি সহায়তা প্রদান ও রাজনৈতিক মামলায় সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমে ব্যারিস্টার সাগর বিএনপির কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের আস্থা অর্জন করেছেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপির ঘরের সন্তান। দলের মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম, আছি। আশা করি, হাইকমান্ড আমার কাজের মূল্যায়ন করবেন।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘বাগমারার সামাজিক বৈষম্য, দুর্নীতি, মাদক ও প্রতিহিংসামুক্ত সমাজ গড়াই আমার লক্ষ্য।’
রাজশাহীর এই তিন তরুণ ব্যারিস্টারের মনোনয়ন প্রত্যাশাকে স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দেখছেন বিএনপির “নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব গঠনের প্রয়াস” হিসেবে। তৃণমূলের কর্মীরা বলছেন—এই তরুণ নেতৃত্ব মাঠে নামলে রাজশাহীর রাজনীতিতে নতুন স্রোত বইবে।