Home First Lead মনোনয়নে ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য: অর্থনৈতিক বার্তা দিচ্ছে বিএনপি

মনোনয়নে ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য: অর্থনৈতিক বার্তা দিচ্ছে বিএনপি

আমিরুল মোমেনিন, ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি তাদের প্রথম দফার প্রার্থীতার তালিকা ঘোষণা করেছে। এতে অভিজ্ঞ ও নবীন নেতাদের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার প্রচেষ্টা স্পষ্ট হয়েছে। দলটি শুধু নির্বাচনী প্রস্তুতিই নয়, বরং রাজনৈতিক বার্তা পাঠাতেও এই ঘোষণাকে কৌশলগতভাবে ব্যবহার করছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ঘোষিত মনোনয়নের মধ্যে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তিনটি আসনে, যার একটি ফেনী। এই সিদ্ধান্তকে প্রতীকী হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এটি বিএনপির মূল নেতৃত্বের সক্রিয় উপস্থিতি ও ঐক্যের বার্তা বহন করছে।

মনোনয়ন তালিকায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ নেতাদের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে জনপ্রিয় নতুন মুখও রয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের কয়েকটি আসনে দলীয় তরুণ নেতৃত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এতে আগামী দিনের নেতৃত্বে প্রজন্ম পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

তবে মনোনয়ন বণ্টনে অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য রক্ষা করা বিএনপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। কিছু জেলায় একই আসনে একাধিক প্রার্থী থাকায় স্থানীয় পর্যায়ে অসন্তোষের খবরও পাওয়া গেছে। দলীয় হাইকমান্ড বলছে, চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে সব মতবিরোধ সমাধানের চেষ্টা চলছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপির এই মনোনয়ন প্রক্রিয়া আসলে দ্বৈত উদ্দেশ্য বহন করছে, একদিকে মাঠে নির্বাচনী প্রস্তুতি, অন্যদিকে আন্দোলন-কেন্দ্রিক রাজনীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। বিশেষ করে দলটি এখনো সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না জানালেও, প্রার্থীতার ঘোষণা দিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে সক্রিয় উপস্থিতি ধরে রাখার কৌশল নিয়েছে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবসায়ী শ্রেণির উপস্থিতি এবার তুলনামূলক বেশি। এতে দলের অর্থনৈতিক ইশতেহার ও বাজারমুখী নীতি প্রণয়নে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আসতে পারে। ব্যবসায়বান্ধব রাজনৈতিক বার্তা দিয়ে বিএনপি সম্ভবত শহুরে মধ্যবিত্ত ও উদ্যোক্তা ভোটারদের আস্থা পুনরুদ্ধারে চেষ্টা করছে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এই মনোনয়ন ঘোষণার মাধ্যমে বিএনপি নিজেদের সংগঠন পুনর্গঠনের পাশাপাশি রাজনৈতিক মাঠে শক্ত অবস্থান জানান দিচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, দলটি নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত অংশ নেয় কি না, নাকি এই প্রস্তুতি কেবল কৌশলগত চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।